অঙ্গীকার: চান্দ্রেয়ীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চক্ষু ও অঙ্গদানের কাগজে সই।
বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্নাতক স্তরের নার্সিং ছাত্রী তিনি। পড়াশোনা হস্টেলে থেকে। ছুটিতে বাড়ি এসে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মরণোত্তর চক্ষুদান করলেন চান্দ্রেয়ী চৌধুরী। বাবা-মাকে পাশে নিয়ে ২১ বছরের ছাত্রীকে এমন কাজ করতে দেখে এগিয়ে এসে আরও ৫০ জন অঙ্গীকার করলেন মরণোত্তর চক্ষু ও অঙ্গদান এবং আপৎকালীন ভিত্তিতে রক্তদাতা হওয়ার। চক্ষু ও অঙ্গদান আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের মতে, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক উদ্যোগে এমন পদক্ষেপ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে বিপুল ভাবে সহায়ক হবে।
মধ্যমগ্রামের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠে রবিবার প্রথমে চোখ ও অঙ্গদানের উপকারিতা নিয়ে আলোচনার পরে দানপত্রে সই করেছেন ৫১ জন। অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ও বিধায়ক রথীন ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসক গোপেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও আরও কিছু বিশিষ্ট মানুষ। অঙ্গীকারপত্রে সই করার পরে চান্দ্রেয়ীর বক্তব্য, ‘‘সাধারণ ভাবে জন্মদিনে যে রকম হয়, সে ভাবে কেক কেটে আনন্দ না করে অন্য ভাবে কিছু করব ঠিক করেছিলাম। আপাতত চক্ষুদানের অঙ্গীকার করলাম, যাতে এক দিন প্রয়োজনে তা মানুষের কাজে লাগে।’’ চান্দ্রেয়ীর বাবা অনির্বাণ চৌধুরী এলাকায় নানা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে যে ভাবে এগিয়ে এসে গতানুগতিকতার বাইরে জন্মদিনকে মানুষের কাজে লাগাতে চেয়েছে, তাতে আমি আপ্লুত! পারিবারিক অনুষ্ঠানকেও সমাজের জন্য আমরা যে অর্থবহ করে তুলতে পারি, এই বার্তা ছড়িয়ে পড়লেই খুশি হব।’’
অঙ্গীকার করতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ছিলেন। কোথায় কী ভাবে অঙ্গদান করা যায়, তাঁর খোঁজ নিতেও উৎসাহ দেখিয়েছেন অনেকে।