আকাশে তেল লিক, জরুরি অবতরণে বাঁচোয়া

ককপিটে বসে পাইলট হিসেব কষে দেখেন, তত ক্ষণে এক টন তেল পড়ে গিয়েছে। ১৩৬ জন যাত্রী এবং ১০ কর্মী নিয়ে শনিবার রাতে বিমানটি তখন বঙ্গোপসাগরের উপরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিমানের ডান দিকের ইঞ্জিন থেকে হুহু করে তেল বেরিয়ে যাচ্ছিল ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে। ককপিটে বসে পাইলট হিসেব কষে দেখেন, তত ক্ষণে এক টন তেল পড়ে গিয়েছে। ১৩৬ জন যাত্রী এবং ১০ কর্মী নিয়ে শনিবার রাতে বিমানটি তখন বঙ্গোপসাগরের উপরে।

Advertisement

এয়ার ইন্ডিয়ার ওই এয়ারবাস ৩২০ নিও বিমানের পাইলট গত্যন্তর না-দেখে মাঝ-আকাশেই বিমানের ডান দিকের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেন। কিন্তু তাতেও তেল পড়া বন্ধ হয়নি। শেষে বাধ্য হয়ে একটি ইঞ্জিনে ভরসা করে তিনি জরুরি অবতরণ করেন কলকাতায়। বিমানটি ব্যাঙ্কক থেকে দিল্লি যাচ্ছিল। রাত সাড়ে ১০টার পরে বিমানটি রানওয়েতে নামে। সেখানেও তেল ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে প্রায় ২০ মিনিট কলকাতায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখতে হয়।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শনিবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ বিমানটি যখন সবে মায়ানমারের আকাশসীমা পেরিয়ে কলকাতার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর আওতায় ঢুকেছে, তখনই পাইলট ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান। বিমান পরিবহণে এই ‘মে ডে’ হল মহাবিপদের বার্তা। পাইলটের কাছ থেকে সেই বার্তা পেয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে আপৎকালীন অবস্থা জারি করা হয়। অগ্রাধিকার দিয়ে নামিয়ে আনা হয় বিমানটিকে। কলকাতার মাটি ছোঁয়ার পরে বোঝা যায়, ডান দিকের ইঞ্জিন থেকে হুহু করে তখনও বেরিয়ে চলেছে তেল। জরুরি অবতরণের পরে জানা যায়, প্রায় দেড় টন তেল পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

‘‘ভাগ্যিস ককপিটে বসে টের পেয়েছিলেন পাইলট। কারণ, যে-হারে তেল বেরিয়ে যাচ্ছিল, তাতে আকাশে থাকলে কিছু ক্ষণের মধ্যেই জ্বালানি শেষ হয়ে যেত। তখন বড় দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন হত,’’ বলেন কলকাতা বিমানবন্দরের এক কর্তা। রাত সাড়ে ১০টায় বিমানটি নামার পরে দেখা যায়, প্রধান রানওয়ে জুড়ে তেল পড়ে আছে। সেই রানওয়ে বন্ধ করে দিতে হয়। সেই সময় কলকাতা থেকে উড়তে প্রস্তুত হচ্ছিল তিনটি বিমান। আর শহরের আকাশে এসে নামার জন্য চক্কর কাটছিল ১০টি বিমান। সেগুলোকে আটকে দিয়ে শুরু হয় রানওয়ে সাফাইয়ের কাজ।

রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলায় বন্ধ ছিল দ্বিতীয় রানওয়েটিও। ফলে প্রায় ২০ মিনিটের জন্য বিমানবন্দর স্তব্ধ হয়ে যায়। কলকাতায় নামতে আসা বিমানগুলির মধ্যে মুম্বই থেকে আসা ইন্ডিগোর একটি বিমান জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মুখ ঘুরিয়ে ভুবনেশ্বর চলে যায়। রাত ১০টা ৫০ মিনিটের পরে দ্বিতীয় রানওয়ে খুলে দেওয়া হয়। নেমে আসতে থাকে একের পর এক বিমান।

এয়ার ইন্ডিয়ার বিগড়ে যাওয়া বিমানের যাত্রীদের নামিয়ে তাঁদের অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের কাজকর্ম চুকিয়ে ফেলা হয়। রাতে দিল্লি থেকে আসা একটি বিমানে তাঁদের পাঠানো হয় রাজধানীতে। বিমান সংস্থা জানিয়েছে, বিগড়ে যাওয়া বিমানটি মেরামতির পরে রবিবার সকালে যাত্রী নিয়ে মুম্বই উড়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন