ধর্মতলার মাঝারি মাপের হোটেলে ভাতের সঙ্গে দেওয়া হত দু’টুকরো পেঁয়াজ। কিন্তু মঙ্গলবার ওই হোটেলে যাঁরা খেতে যান তাঁদের পাতেই পড়েনি পেঁয়াজ। কেন? হোটেলকর্মীর উত্তর, ‘‘দাদা, পেঁয়াজে আগুন লেগেছে। তাই বন্ধ।’’
রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের ২৮ জুলাই খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দর ছিল কিলো ৩০ টাকা। মঙ্গলবার খুচরো বাজারে সেই পেঁয়াজের দাম দাঁড়িয়েছে কিলো প্রতি ৪০ টাকা।
সারা দেশেই এ বছরে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত দু-তিন বছরে দেশে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ এতটা বাড়েনি বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। মূল্যবৃদ্ধির আঁচ লেগেছে কলকাতার বাজারেও। সকালে বাজারে গিয়ে দামের ঝাঁঝে পেঁয়াজ কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত মানুষের।
কোলে মার্কেটের আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ রাউত জানান, ‘‘গত বছর পেঁয়াজের দাম এতটা চড়েনি। কারণ বাইরের রাজ্য থেকে আমদানির পরিমাণ ঠিক ছিল। এ বার নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসছে কম। বেশ কয়েক দিন হল রেলের ওয়াগনে পেঁয়াজ আসেনি। তাই জোগানে টান পড়েছে।’’
রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেঁয়াজের বাৎসরিক চাহিদা প্রায় আট লক্ষ টন। প্রায় পাঁচ লক্ষ টন পেঁয়াজ আসে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র এবং রাজস্থান থেকে। বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, হুগলি, মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু এলাকায় খরিফ শস্য হিসেবে পেঁয়াজের চাষ করা হয়। এই পেঁয়াজই রাজ্যের ঘাটতি মেটায় বলে কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, বাইরে থেকে আসা পেঁয়াজের জোগানেই টান পড়েছে বলে এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কেন এই ঘাটতি? মহারাষ্ট্র স্টেট এগ্রিকালচার মার্কেটিং বোর্ডের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার দিগম্বর সাগলে বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্যই এই সমস্যা হচ্ছে। চাষিরা পেঁয়াজ নিয়ে পাইকারি বাজারে পৌঁছতে পারছেন না। বৃষ্টি থামলে বাজারে জোগান স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’
রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান বিভাগের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য টাস্কফোর্স রয়েছে। এর চেয়ারপার্সন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ফিরলেই এই নিয়ে বৈঠক করব।’’