রাজ্যের বার্ষিক শিল্প সম্মেলনকে মেলা, খেলা, মোচ্ছবের অতিরিক্ত কিছু ভাবতে রাজি নন বিরোধীরা। শিল্প সম্মেলনের প্রথম দিনেই মঙ্গলবার বিরোধীরা একযোগে দাবি তুলল, প্রস্তাব তো অনেক এসেছে। কিন্তু গত তিন বছরে রাজ্যে আসল বিনিয়োগের পরিমাণ কত, তা শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ রাজ্যে প্রকৃত কত টাকার বিনিয়োগ হয়েছে, তার হিসেব সরকার প্রকাশ করেনি। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে রাজ্যে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তা আদতে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ নয় বলে বারবারই অভিযোগ করে বিরোধী বাম, কংগ্রেস, বিজেপি। এ দিনও সেই সুরেই বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে এই সম্মেলন কোটি কোটি টাকার মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কত টাকার বিনিয়োগ হয়েছে, সে ব্যাপারে অবিলম্বে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও কটাক্ষ, ‘‘শিল্পপতি ধরতে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন! কিন্তু বিনিয়োগ কত এসেছে? উনি যা-ই দাবি করুন, আসলে ফল শূন্য।’’ একই দাবি বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীরও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একমঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ঘনিষ্ঠ মুকেশ অম্বানীর উপস্থিতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। সুজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘এফআরডিআই বিল আসছে যে অম্বানী, আদানিদের সুবিধা করে দিতে, তাঁদেরই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এখানে নাচানাচি করছেন!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আবার বলেন, ‘‘বাংলার শিল্পপতিরাই তো রাজ্যের বাইরে বিনিয়োগ করছেন। তা হলে বাইরে থেকে কেন বিনিয়োগ আসবে?’’ শিল্পসম্মেলনে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে বলে অভিযোগ করে অধীর বলেন, ‘‘এ রাজ্যে ঋণের পরিমাণ ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা না মিটিয়ে এ ভাবে শিল্প সম্মেলনে টাকা খরচের মানে কী!’’