রায়ে খুশি, অবিলম্বে বকেয়ার দাবি সব সংগঠনের

বিরোধী সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতারা এক সুরেই দাবি জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়ের পরে সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে ‘ঘেউ ঘেউ’ মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ করা উচিত। পাশাপাশিই তাঁদের দাবি, খেলা-মেলায় খরচা কমিয়ে অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দিক সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৮
Share:

মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের অধিকার বলে হাইকোর্ট রায় দেওয়ায় খুশি বিরোধী শিবির। অন্যান্য দলের সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত রায়কে স্বাগত জানিয়েছে এমনকি তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনও। আর সিপিএমের কো-অর্ডিনেশন কমিটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, বকেয়া মহার্ঘ ভাতা না মেটালে বা নভেম্বরের মধ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর না করা হলে নবান্ন অবরুদ্ধ হবে।

Advertisement

বিরোধী সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতারা এক সুরেই দাবি জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়ের পরে সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে ‘ঘেউ ঘেউ’ মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ করা উচিত। পাশাপাশিই তাঁদের দাবি, খেলা-মেলায় খরচা কমিয়ে অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দিক সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে সর্বশেষ ঘোষণা ছিল, ১৮% মহার্ঘ ভাতা এবং সঙ্গে আরও ৭% অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা মিলিয়ে মোট ২৫% সরকারি কর্মচারীরা পাবেন আগামী বছর জানুয়ারি থেকে। আদালতের রায়ের পরে সরকারি তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। নবান্ন থেকে বেরেনোর সময়ে মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রীও। তবে শিক্ষামন্ত্রী ও শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছিল কর্মচারীদের প্রাপ্যের ন্যায্যতা ও যে দেবে, তার আর্থিক ক্ষমতা। মাথায় রাখতে হবে, সরকার উন্নয়নের কাজটা করবে কী ভাবে?’’

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সরকারি কর্মচারীদের যাঁরা ঘেউ ঘেউ করা জীবের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, এটা তাঁদের পরাজয়। মহার্ঘ ভাতা সারা ভারতেই স্বীকৃত অধিকার। এখানে সেই অধিকার আদায় করার জন্যও আদালতে যেতে হল!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘প্রতিষ্ঠিত হল যে, মহার্ঘ ভাতা বদান্যতা নয়! এর পরেও স্যাটে কিছু অন্যথা হলে রাস্তার লড়াইয়ে মানুষ তো আছেনই। রাস্তার লড়াই আর আইনি লড়াই মিলে অধিকার রক্ষা করতে হবে।’’ হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মহার্ঘ ভাতা রাজ্যের মর্জির উপর নির্ভর করে না, এটা অধিকার’

মামলাকারী কর্মচারী সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম আইএনটিইউসি প্রভাবিত ‘কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লইজে’র সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই রায় কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করল।’’ সিপিএমের কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিংহের বক্তব্য, ‘‘মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের আইনি অধিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হল। অবিলম্বে ৫৬% বকেয়া মহার্ঘ ভাতা এবং ষষ্ঠ বেতন কমিশন দিতে হবে।’’

তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাসও রায়কে স্বাগত জানিয়েই বলেছেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার প্রতি মুখ্যমন্ত্রী সহানুভূতিশীল। বিভিন্ন সময়ে সরকারের নানা পদক্ষেপ তা প্রমাণ করেছে। এ বারেও সরকার নিশ্চয়ই আদালতের রায় অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’ বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলাটি এখনও স্যাটে বিচারাধীন। সংগঠনের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল বলেন, ‘‘এখন আমরা চাই মামলার যে অংশ স্যাটে ফিরে গেল, তার সঙ্গে আমাদের মামলা একসঙ্গে শোনা হোক।’’

তবে সকলেই মহার্ঘ ভাতা মেটানোর দাবি তুললেও কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই)-এর বিচারে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র ফারাক কত, তা নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের আলাদা মত আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন