এর আগে বিরোধী-শূন্য পঞ্চায়েত গড়ার হুঙ্কার শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এ বার বললেন, নলহাটি পুরভোটের মডেলেই বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট করবেন। এবং চড়াম চড়াম নয়, দড়াম দড়াম শব্দে ঢাক বাজবে পঞ্চায়েত ভোটে।
বক্তার নাম, অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত ওরফে কেষ্টর মুখে ওই কথা শুনে আশঙ্কা ও আতঙ্ক, দুই-ই বেড়েছে বিরোধী শিবিরে। তাঁদের দাবি, পুরভোটের দিন নলহাটিতে যে ভাবে রাখি-বাহিনী নামিয়ে ভোট লুঠ করিয়েছেন অনুব্রত, ঠিক সেই কৌশলই নেবেন পঞ্চায়েত ভোটে। হয়তো বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়নই তুলতে দেবেন না। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২০১৩ সালেও।
এমনিতেই সদ্য সমাপ্ত সাত পুরসভার ভোট নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের অন্ত নেই। দু’টি উপনির্বাচন ধরে ১৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪২টিতেই জিতেছে তৃণমূল। এই আবহে বৃহস্পতিবার পুরভোটের ফল প্রকাশের পরের সাংবাদিক বৈঠকে অনুব্রত বলেন, ‘‘নলহাটির ভোট যেমন ভাবে করেছি, তেমন করেই বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট করব!’’ কী ভাবে? সেটা আর ভাঙেননি কেষ্ট। বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কটাক্ষ, ‘‘ভেঙে না বললেও চলবে। বুথ দখল, ছাপ্পা, রিগিং করে পঞ্চায়েত ভোট জেতার কথাই তো বলতে চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রীর স্নেহধন্য ওই ছাত্র!’’
বিরোধী নেতারা মনে করছেন, নলহাটির পুরভোটের ফল ১৬-০ করতে না পেরেই ফের মেজাজ হারিয়েছেন অনুব্রত। কাঁটার মতো বিঁধছে ১ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হার। যার জন্য ওই দুই ওয়ার্ডে উন্নয়ন না করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন তিনি। পুরবোর্ড নিরঙ্কুশ করতে না পারলেও পঞ্চায়েতে জেলা ‘বিরোধী-শূন্য’ হয়ে যাবে বলে আগে ভাগেই জানিয়ে রাখছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। অনুব্রত কথায়, ‘‘জেলার ১৬৭টা পঞ্চায়েত, ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতি, ৪২টি জেলা পরিষদ দখল করব। পঞ্চায়েত ভোটে বড় বড় ঢাক দড়াম দড়াম শব্দে বাজবে।’’
অনুব্রতর মুখে হুমকি অবশ্য নতুন নয়। গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে পাড়ুইয়ের কসবায় নির্দল প্রার্থীর বাড়ি জ্বালানো ও পুলিশের উপরে ‘বোম’ মারার কথা বলে বিতর্কে জড়ান তিনি। অভিযোগ, তার পরেই কসবায় একাধিক নির্দল প্রার্থীর বাড়িতে হামলা হয়, খুন হন বৃদ্ধ সাগর ঘোষ।
তবে, এ বার নলহাটি পুরভোটে ছাপ্পা, বুথ দখল হয়নি বলে দাবি অনুব্রতর। যা শুনে জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটে বিরোধী প্রার্থীর সঙ্গে নলহাটির প্রতি বুথে তৃণমূলের ব্যবধান ছিল গড়ে ২৮টি ভোটের। পুরভোটে সেটা বেড়ে কোথাও ১২০০, কোথাও ৮০০। এতেই প্রমাণিত ভোট লুঠ হয়েছে।’’