Murder

শ্রদ্ধার খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিবেদিতার মা-বাবা, দেহরাদূনে দুর্ভোগ কন্যাহারা দম্পতির

দেড় বছর আগে নিবেদিতার পরিণতির সঙ্গেও শ্রদ্ধার ঘটনার অনেকটাই মিল। নিবেদিতার প্রেমিক অঙ্কিত চৌধুরীও একই রকম নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে প্রেমিকাকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১৮
Share:

নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

শ্রদ্ধা ওয়ালকরের নৃশংস পরিণতির খবর পেয়ে অসুস্থ বোধ করছেন নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়ের মা, বাবাও। মেয়ের জন্য সুবিচার চাইতে অন্ডালের বাড়ি থেকে বহু দূরে দেহরাদূনে দিনের পর দিন পড়ে থেকে গভীর অবসাদ তাঁদেরও গিলতে আসছে।

Advertisement

দেড় বছর আগে ২৫ বছরের নিবেদিতার পরিণতির সঙ্গেও শ্রদ্ধার ঘটনার অনেকটাই মিল। নিবেদিতার প্রেমিক অঙ্কিত চৌধুরীও একই রকম নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে প্রেমিকাকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২১-এর ২৮ এপ্রিল নিবেদিতাকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে অঙ্কিত খুন করে। এর পরে আরও দু’জনের (অনুজ নারঙ্গ, চন্দ্রপ্রকাশ নারঙ্গ) সাহায্যে মসূরীর কাছে খাদের জঙ্গলে নিবেদিতার দেহ ফেলে সে পোড়ানোর চেষ্টা করেছিল বলেও অভিযোগ। তার পরে প্রায় মাস দুয়েক বিষয়টি সুকৌশলে ধামাচাপা দিয়ে নিবেদিতার মা, বাবাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও অঙ্কিত সমান তালে চালায় বলে নিহত তরুণীর পরিবারের দাবি।

গত বছর ২৬ জুন নিবেদিতার দেহাংশ উদ্ধার হলেও এখনও সম্পূর্ণ ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলে বুধবার পুলিশ জানাচ্ছে। অঙ্কিতের সহযোগী দু’জন জামিনও পেয়েছে। এ দিকে নিবেদিতার মা, বাবা, বোন সাক্ষ্য দিতে বার বার দেহরাদূনে ঘুরছেন। এখন তাঁদের চেষ্টা, দেহরাদূন জেলা আদালতে আর্জি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কোথাও থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে সাক্ষ্য দেওয়া।

Advertisement

নিবেদিতার দিদি অন্তরা বলছিলেন, “শ্রদ্ধার ঘটনাটা শুনে বাবা, মা ভেঙে পড়েছেন। বাবার সাক্ষ্যের দিন ছিল সোমবার। সেটা আদালতে পিছিয়ে শনিবার হয়েছে। তাই নতুন করে ফেরার টিকিট করতে হল।” অভিযোগ, ইতিমধ্যে বিষয়টা মিটিয়ে নিতে অঙ্কিতের পরিজনদের নামে ফোনও আসছে। পুলিশকে জানিয়েও ফল মেলেনি। দেহরাদূনের রাজপুর থানার তদন্তকারী অফিসার ইতিমধ্যে বদলি হয়েছেন। ওই নম্বরে ফোন করলে থানার আর একজন অফিসার বলেন, “থানার বাইরে আছি। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।”

ইসিএলের কর্মী হলধর মুখোপাধ্যায়কে (নিবেদিতার বাবা) গত ১৬-১৭ মাসে বার ছয়েক সপরিবারে দেহরাদূনে আসতে হয়েছে। অন্তরা বলছিলেন, “বাঙালির কাছে দেহরাদূন, মসূরী বেড়ানোর জায়গা। আর আমাদের নামটা শুনলেই অসুস্থ লাগে।” তাঁর কথায়, “মেয়ে খুন হলে আসল শাস্তি বোধহয় বাড়ির লোককেই পেতে হয়। আমরা বোনের দেহ শনাক্ত করা থেকে ডিএনএ-র জন্য রক্ত দেওয়া, বার বার সাক্ষ্যের কাজে এত দূরে আসছি। আসামি পক্ষের উকিল না থাকলেও সাক্ষ্য পিছোচ্ছে। তার উপরে মা, বাবা বা আমার আলাদা, আলাদা সময়ে সাক্ষী হতে ডাক আসছে। জলের মতো খরচ হচ্ছে। জানি না এর শেষ কোথায়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন