school

Schools: স্কুল হোক ছ’দিনই, চান অভিভাবকেরা

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে অভিভাবকদের বক্তব্য, গত দেড় বছরে অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

অনলাইন পড়াশোনার জন্য মিলেছিল স্মার্ট ফোন। কিন্তু পড়ার থেকে সেই ফোনে কোনও পড়ুয়ার গেমের উপরেই আসক্তি বেশি। কেউ বা বুঁদ হচ্ছে পর্নোগ্রাফি সাইট চর্চায়। তাই বেশির ভাগ অভিভাবক চাইছেন, সপ্তাহে ছ’দিনই স্কুল হোক। তাতে যদি স্মার্ট ফোন বা ইন্টারনেট আসক্তি কাটাতে পারে সন্তানেরা। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে আসার দিন নির্দিষ্ট করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু অভিভাবকেরা চান, সপ্তাহে ছ’দিনই স্কুলে হাজির হোক তাঁদের সন্তানেরা। পর্ষদের নির্দেশিকা মেনে শনিবার অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠকের আয়োজন করেছিল বিভিন্ন স্কুল। সেই বৈঠকগুলিতেই অভিভাবকেরা এমন কথা জানিয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে অভিভাবকদের বক্তব্য, গত দেড় বছরে অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা। কেউ কেউ বা দীর্ঘদিন স্কুলে না-যাওয়ার বদলে এলাকায় কুসঙ্গে জড়িয়েছে। তাই সনাতন পদ্ধতিতে ক্লাসে সপ্তাহভর পঠনপাঠন হলে সেই সব আসক্তি এবং সঙ্গদোষ কাটবে বলেও মনে করছেন অভিভাবকেরা।

এ দিন শহরের স্কুলগুলিতে বৈঠকে অভিভাবকদের উপস্থিতির হার ভাল ছিল। তবে গ্রামের দিকে সেই হার ততটা হয়নি। অনেক স্কুলেই অভিভাবকদের উপস্থিতির হার ২৫ শতাংশের কম ছিল। তার কারণ হিসেবে অনেক শিক্ষক জানাচ্ছেন, এখন ধান কাটার সময়। অনেক অভিভাবকই ধান কাটতে মাঠে চলে গেছেন। কিছু কিছু গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষকেরা নিজেরাই পড়ুয়াদের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। সন্তানদের স্কুলে ফেরানোর ইচ্ছে অবশ্য শহর এবং গ্রামে প্রায় সমান বলেই শিক্ষকেরা জানান।

Advertisement

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নামখানার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রনীল প্রধান জানান, বেশির ভাগ পড়ুয়ার অভিভাবকই সপ্তাহে ছ’দিন স্কুলে ক্লাস হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিছু অভিভাবকদের বক্তব্য, আর্থিক কষ্ট সত্ত্বেও অনলাইন ক্লাসের জন্য সন্তানদের স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে পড়াশোনার বদলে মোবাইল গেমের নেশাই বেশি জাঁকিয়ে বসেছে। ফোন রিচার্জের টাকা জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি জানান, তাঁদের স্কুলের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন যে অনলাইন ক্লাসের বদলে মোবাইল গেম এবং নানাবিধ ওয়েবসাইট ঘাঁটায় আসক্তি জন্মেছে। তাই ছ’দিন ক্লাস হলেই ভাল হয়। অনেক অভিভাবক আবার প্রশ্ন করেছেন, তিন দিন স্কুল এবং বাকি দিন অনলাইন ক্লাস, এ ভাবে পাঠ্যসূচি শেষ হবে তো? কেউ বা প্রশ্ন করেছেন প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস নিয়ে।

তবে এ সবের বাইরেও বহু পড়ুয়া স্কুলছুট হয়েছে। ছেলে এবং মেয়ে, দু দিকেই অপরিপক্ক বয়সে বিয়ের ঘটনা বেড়েছে। তেমনই একটি ঘটনার এ দিন সাক্ষী হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলের শিক্ষকেরা। ডেবরা থানার অন্তর্গত পসং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক কিঙ্কর অধিকারী জানান, এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের অভিভাবক না-আসায় তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন শিক্ষকেরা। সেখানেই জানতে পারেন, ছাত্রটি মাঠে ধান কাটতে গিয়েছে। এও দেখেন, অতিমারি পর্বে ছাত্রটির বিয়ে হয়েছে। এ দিন সন্তান কোলে নিয়ে বসে ছিলেন ওই পড়ুয়ার স্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন