ফাইল চিত্র।
ফি বছর গড়ে কমানো হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। রেলের হাতে থাকা একমাত্র কলকাতা মেট্রোর প্রতি এই বিমাতৃসুলভ মনোভাবের কড়া সমালোচনা করল রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বাজেটে অর্থ বরাদ্দের প্রশ্নে বাংলার প্রতি বঞ্চনার যে অভিযোগ তৃণমূল তুলে আসছিল তাতেই সিলমোহর বসাল ওই সংসদীয় কমিটি। এই কমিটির চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রিপোর্ট নতুন করে অস্ত্র তুলে দিল তৃণমূলের হাতে।
দেশের বিভিন্ন শহরে মেট্রো নির্মাণের কাজ চললেও, রেল মন্ত্রকের হাতে রয়েছে কেবল কলকাতা মেট্রো নির্মাণের দায়িত্ব। জোকা-বিবাদি বাগ, নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর, নোয়াপাড়া-বারাসত, মূলত এই ৪টি রুটে প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে রেল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মেট্রো খাতে গত দু’বছর ধরে আগের বছরের তুলনায় গড়ে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমেছে। ২০১৭-১৮-র বাজেটে মেট্রো রেলের জন্য ১৯৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রক দেয় ১৫০০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটেও (২০১৮-১৯) বরাদ্দ নামিয়ে আনা হয়েছে ১১০০ কোটি টাকায়। বছরের শেষে ওই খাতে চূড়ান্ত কত মিলবে তা নিয়েও রীতিমতো সংশয় প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কমিটি মনে করে কলকাতা মেট্রো প্রকল্পের জন্য আরও বেশি করে অর্থ বরাদ্দ করা উচিত। কারণ কলকাতার মেট্রো দেশের সব চেয়ে পুরনো মেট্রোব্যবস্থাই শুধু নয়, সড়ক সমস্যায় ভুগতে থাকা কলকাতার অন্যতম পরিবহণও বটে। সেই কারণে সুদীপবাবুদের পরামর্শ, অর্থ বরাদ্দ কমানোর চেয়ে বরং ওই খাতে আরও টাকা বাড়ানো উচিত রেলের। কমিটির পর্যবেক্ষণ, নতুন মেট্রোর লাইনগুলি চালু হলেই টিকিট বিক্রি করে রেলের ঘরে টাকা আসতে শুরু করবে।
রেল মন্ত্রকের বক্তব্য, তাদের টাকা দিতে আপত্তি নেই। কিন্তু সমস্যা হল, পশ্চিমবঙ্গে মেট্রোর নির্মাণকাজের গতি খুবই শ্লথ। যার মূল কারণ জমি সমস্যা। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর মাত্র আড়াই কিলোমিটার লাইন পাতার কাজ ৭ বছরেও শেষ হয়নি। রাজ্যের তৃণমূল সরকারও জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে রেলের পাশে দাঁড়াতে নারাজ। ফলে ফি বছরের কাজের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে না পারায় টাকা ফেরত আসছে রেলের ঘরে। যার ভিত্তিতে পরের বছর অনুদান কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে রেল। রেলকর্তাদের আশ্বাস, দেরি হওয়া মানেই প্রকল্পের খরচ বেড়ে যাওয়া। রেল তা চায় না। কাজ দ্রুত এগোলে বছরের মাঝেও বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করবে মন্ত্রক।