State News

‘রাজভবন কখনই বিজেপি-র আস্তানা হতে পারে না’

এ দিন সাতসকালে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পার্থবাবু। সেখানে তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যপালের আচরণ অনভিপ্রেত। তিনি ক্যাডারসুলভ আচরণ করছেন। রাজ্যপালের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি জানেন না।” এখানেই থেমে থাকেননি পার্থবাবু। কেশরীনাথকে বিজেপি-র মুখপাত্র বলেও আক্রমণ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১২:৩৯
Share:

রাজ্যপাল ক্যাডারসুলভ আচরণ করছেন বলে অভিযোগ পার্খ চট্টোপাধ্যায়ের। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যপালের সঙ্গে দ্বন্দ্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াল তাঁরই দল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর মতোই চড়া সুরে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে বুধবার আক্রমণ করলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠির প্রতিলিপি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পার্থবাবু। একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, নিজের অবস্থানে অনড় থাকলে এর পর রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতেও সরব হবেন তাঁরা। পাশাপাশি বিজেপি-কেও তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, “রাজভবন কখনই বিজেপি-র আস্তানা হতে পারে না। রাজ্যপাল যদি তাঁর বক্তব্যে অনুতপ্ত না হন তা হলে কঠিন পথে যাব।”

Advertisement

এ দিন সাতসকালে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পার্থবাবু। সেখানে তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যপালের আচরণ অনভিপ্রেত। তিনি ক্যাডারসুলভ আচরণ করছেন। রাজ্যপালের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি জানেন না।” এখানেই থেমে থাকেননি পার্থবাবু। কেশরীনাথকে বিজেপি-র মুখপাত্র বলেও আক্রমণ করেছেন।

আরও পড়ুন

Advertisement

ভেবেছিলাম ছেড়েই দেব

মঙ্গলবার রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে কার্যত নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। গত কয়েক দিন ধরে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সে বিষয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন রাজ্যপাল। সেই সময়ই দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলে নবান্ন সূত্রের খবর। কথা কাটাকাটির জেরে রাজ্যপালের ফোনও নাকি কেটে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর কার্যত নজিরবিহীন ভাবে প্রকাশ্যেই রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মমতা অভিযোগ করেন, “উনি আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন।” মমতার এই প্রতিক্রিয়ার পাল্টা বিবৃতিও দেওয়া হয় রাজভবনের তরফে। প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এই ভঙ্গিমা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। তিনি যে এই ঘটনায় যারপরনাই বিস্মিত, তা জানিয়ে দেন। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীকে অপমানিত করা হয়নি বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

তবে ওই বিবৃতি সত্ত্বেও যে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাতের সমাপ্তি ঘটছে না, এ দিন তা স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। এ দিন পার্থবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে যে ভাষায় কথা বলা হয়েছে যেন মনে হচ্ছে তিনি রাজ্যপালের অধীনস্ত কর্মচারী। এই হুমকির তীব্র প্রতিবাদ করছি। মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করলে তৃণমূল ছেড়ে কথা বলবে না।”

বসিরহাট-বাদুড়িয়ার প্রসঙ্গে সরাসরি বিজেপি-কে আক্রমণ করে পার্থ বলেন, “বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি। এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিয়ে কোনও লাভ হবে না। এখানে কুঁড়িও ফুটবে না। পদ্ম ফোঁটা তো দূরের কথা।”

গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নিন্দা করছে বিজেপি। বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন তা আগে কখনও দেখা যায়নি। ওঁর যদি কিছু বলার থাকত তা তিনি কেন্দ্রকে জানাতে পারতেন।” উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির প্রসঙ্গ তুলে রাহুলবাবুর অভিযোগ, “আসল ঘটনা আড়াল করে মানুষের নজর ঘোরাতেই এ ধরনের আচরণ করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন