আমি মর্মাহত, বেহালা কলেজে বললেন পার্থ

এলাকার বিধায়ক তিনি। তার উপরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। নিজের এলাকার কলেজে তাঁরই দলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠী-কোন্দল চলছে দিনের পর দিন। তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করছেন। দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

এলাকার বিধায়ক তিনি। তার উপরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। নিজের এলাকার কলেজে তাঁরই দলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠী-কোন্দল চলছে দিনের পর দিন। তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করছেন। দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করছেন। কিন্তু থামাতে পারছেন না। এতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এতটাই হতাশ যে, শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বেহালা কলেজে গিয়ে জানালেন, এই ঘটনায় তিনি ‘মর্মাহত’। আর বিরোধীরা বলছেন, এটা তো হওয়ারই ছিল!

Advertisement

ছাত্র সংগঠনের কাজিয়া থামাতে না-পারার জন্য চূড়ান্ত হতাশা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘বেহালা কলেজের পরিচালন সমিতি ভেঙে দেওয়া হবে।’’

ক্লাসে হাজিরা নিয়ে বিতর্ককে কেন্দ্র করে ওই কলেজে গন্ডগোল চলছে গত শনিবার থেকে। কিছু ছাত্রছাত্রীর অভিযোগ, যাঁদের হাজিরা ৬০ শতাংশের কম, তাঁদের মোটা টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের একাংশ। তার প্রতিবাদেই বিক্ষোভ, রক্তারক্তি। বিক্ষুব্ধেরাও নিজেদের টিএমসিপি-র কর্মী-সমর্থক হিসেবেই দাবি করেন। ছাত্র সংসদ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Advertisement

শনিবার গন্ডগোল থামলেও সোমবার ফের অশান্ত হয়ে ওঠে কলেজ। মঙ্গলবার দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। তার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই বুধবার কলেজে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। এক ছাত্রের মাথা ফাটে। অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্য এক জন। এ দিন কলেজে যান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমি তো শিক্ষামন্ত্রী নই। আমি এখানকার বিধায়ক।’’ পার্থবাবু জানান, তিনি সব পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তা সত্ত্বেও কিছু অসন্তোষ রয়েছে। তার পরেই মন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘‘নিজেরই বিধানসভা কেন্দ্রের একটি কলেজে এ-সব হতে দেখে আমি মর্মাহত। আশা করছি, শীঘ্রই এই সমস্যা মিটে যাবে।’’

টিএমসিপি-র এক নেতার কথায়, ‘‘সংগঠনের নিচু স্তরে অসন্তোষ হলে আমরা মেটানোর চেষ্টা করতাম। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখলেই পার্থদার সঙ্গে বৈঠকের কথা বলতাম। তখন অনেকেই গুটিয়ে যেত। এখন তো দেখছি, পার্থদার কথাই শুনছে না! এটা সংগঠনের পক্ষে ভাল নয়।’’

সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেচারা শিক্ষামন্ত্রী! ওঁর জন্য আমার কষ্ট হয়। নিজের এলাকায় নিজের ঘনিষ্ঠ বাহিনী কলেজ-কর্তৃপক্ষকে মানছে না। ওঁর কথাও শুনছে না!’’ শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র রাজ্য সভাপতি তরুণ নস্কর বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যেখানে পৌঁছেছে, সেটা হওয়ারই কথা ছিল। তৃণমূল নেতৃত্ব যে-ভাবে এদের মদত দিয়েছেন, এটা তার অবশ্যম্ভাবী ফল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন