ফাইল চিত্র।
পাখির চোখ জঙ্গলমহল!
পঞ্চায়েত ভোটে তুলনামূলক খারাপ ফলের পরে ঝাড়গ্রাম জেলা এখন শাসক দলের আতস কাচে। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলের নতুন এই জেলায় দলীয় সংগঠনের ভার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দিয়েছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের আট জন ব্লক সভাপতিকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়ে বৈঠক করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব। আর আজ, শুক্রবার তিনি ঝাড়গ্রামে আসবেন দলীয় বৈঠক করতে।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল পর্যালোচনায় এর আগেও ঝাড়গ্রামে বৈঠক করে গিয়েছেন পার্থবাবু। তৃণমূল সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম জেলায় দলীয়স্তরে বেশ কিছু সংস্কার করতে চলেছেন নেতৃত্ব। পার্থবাবু মানছেন, ‘‘ঝাড়গ্রামে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সাধারণ ভোটারদের সমর্থন রয়েছে। তা সত্ত্বেও যেখানে কম পেয়েছি, তার পিছনে আমাদের নেতৃত্বের জনসংযোগের অভাব যেমন রয়েছে, তেমনই বিজেপি প্রচুর টাকা ছ়ড়িয়ে ফুলে ছাপ দিন বলে ভুল প্রচার করেছে। আমাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’ পার্থবাবু আরও বলেন, ‘‘সাংগঠনিক ভাবে কী করা যায়, দেখা হচ্ছে। ‘‘যেখানে যা যা পরিবর্তন দরকার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষে করব।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতায় পার্থবাবুর বাড়িতে ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের ৮ ব্লক সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে কিছু রদবদল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবিও উঠেছে। বৈঠকের পরে অজিতবাবু বলেন, ‘‘আমি নিজেই ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছি। এটা তো পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব। তবে সিদ্ধান্ত নেবে দল।’’
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী বেলপাহাড়ি ব্লকে অরাজনৈতিক আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের ভাল ফল এবং জেলার অন্যত্র বিজেপি মাথা তোলায় কপালে ভাঁজ পড়েছে শাসকদলের। তৃণমূল সূত্রে খবর, পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসন এবং দলের উদ্যোগে সমান্তরাল ভাবে জনসংযোগ বাড়াতে চাইছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা ঘন ঘন জঙ্গলমহলে গিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি করছেন। সদ্য নতুন দায়িত্ব নিয়েই রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র বেলপাহাড়ি ও লালগড়ের রাস্তায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, অভাব-অভিযোগ, প্রত্যাশার খোঁজ নিয়েছেন। নারী, শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজাও দু’দিনের ঝাড়গ্রাম সফর করে গিয়েছেন। প্রশাসনের এক কর্তা মানছেন, “জঙ্গলমহলের মানুষজনকে ভুল বুঝিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গিয়েছে। তাই কোনও কাজ বকেয়া থাকলে বা কোনও অভিযোগ থাকলে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”