Psychiatry

Psychiatry patient: মনোরোগী তকমা মুছে মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে গেলেন যুবক

পাভলভ হাসপাতাল থেকে সরকারি জীবন সহায়তা কেন্দ্রে আসার এক সপ্তাহের মধ্যে নিজের বাড়ির ঠিকানা বলে দিলেন ত্রিশোর্ধ্ব ওই যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৫:৪৫
Share:

মায়ের সঙ্গে অমিত। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের ওয়ার্ডের গাদাগাদিতে সম্ভব হয়নি। সেখান থেকে বার করে আবাসিক যুবককে নতুন খোলামেলা রংচঙে পরিসরে আনতেই খুলে গেল মনের চাবি।

Advertisement

পুলিশ বা পাভলভ মানসিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিলে দু’বছরে তাঁর মনের সে কথা বের করতে পারেননি। আর একটু সহৃদয় পরিবেশে এসে অবরুদ্ধ ঝর্নার জলের মতো তা যেন খুলে দিলেন যুবকটি। এবং তারই সূত্র ধরে পরিবার বা ঠিকানাবিহীন তকমা আঁটা যুবকের সঙ্গে তাঁর মায়ের দেখা হল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অজ গাঁ থেকে এসে দুঃখিনী মা খুঁজে পেলেন হারানো ছেলেকে।

পাভলভ হাসপাতাল থেকে সরকারি জীবন সহায়তা কেন্দ্রে (অ্যাসিস্টেড লিভিং সেন্টার) আসার এক সপ্তাহের মধ্যে নিজের বাড়ির ঠিকানা বলে দিলেন ত্রিশোর্ধ্ব ওই যুবক। বুধবার বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হোটর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে এসে তাঁর মা ও মামা হারানো ছেলেকে বাড়ি ফেরালেন। ২০২০-র জুলাই থেকে যে ছেলেটির ছিটেফোঁটা হদিশ তাঁদের কাছে ছিল না। বন্ডেল রোড উড়ালপুলের কাছে সবে পথ চলা শুরু করেছে রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরের জীবন সহায়তা কেন্দ্র ‘প্রত্যয়’। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে মানসিক হাসপাতালে সেরে ওঠা আবাসিকদের বেছে নিয়ে চাকরি বা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কাজ করছে তারা। প্রত্যয়ে বসেই মনোরোগীদের ক্ষমতায়ন মঞ্চ ‘অঞ্জলী’-র আধিকারিকদের পরিচর্যায় নিজের বাড়ির কথা বলেছেন ৩২-৩৩ বছরের সেই যুবক অমিত মণ্ডল। দু’বছর আগে মগরাহাট এলাকার বাড়ি থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে বেড়াতে গিয়ে তিনি পরিবার থেকে ছিটকে যান। অমিতের বাবা নেই। তাঁদের রুপোর গয়না তৈরির কারবার ছিল। বাড়িতে শুধু থাকতেন মা ও ছেলে। হোমটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কেয়ার সাপোর্ট ম্যানেজার অনিন্দিতা চক্রবর্তী অমিতের দেওয়া ঠিকানা হাতেই ট্রেনে, অটোয় মগরাহাটের গ্রামের ঠিকানায় পৌঁছে যান। তাঁর কাছে সব শুনে তখনই ছেলের কাছে যেতে মা ঝর্না মণ্ডল অস্থির হয়ে ওঠেন। অনিন্দিতা বলছিলেন, “উনি (অমিতের মা) পারলে তখনই ছেলের কাছে যেতে চাইছিলেন।” একদিনের মধ্যেই তাঁরা ছেলেকে নিতে চলে আসেন।

Advertisement

কিছু ব্যক্তিগত কারণে অমিতের মানসিক অবসাদের ইতিহাস ছিল। তাঁর বক্তব্য, পুলিশ তাঁকে দক্ষিণেশ্বর থেকে ধরে বরাহনগরে একটি হাসপাতালে রাখে। তার পরে পাভলভে পাঠায়। অমিতের কথায়, “মা চিন্তা করছে বলে খারাপ লাগছিল। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনতে চায়নি। ঠিকানাটা কাউকে বলতে পারিনি।” এ দিকে, ছেলেকে না-পেয়ে ওঝা, গুনিনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঝর্নাদেবী। এখন মা, ছেলে দু’জনের চোখে আনন্দাশ্রু। সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “হাসপাতালের আবাসিকদের বন্ধু হয়ে ওঠায় কিছু ফাঁক থাকে। সেটা প্রত্যয়ে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন