পেম্বা শেরপা। ফাইল ছবি
এক-আধবার নয়। আট বার এভারেস্টে উঠেছেন! মাকালু, মানসলু, কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ একাধিক শৃঙ্গ জয়ে অভিযাত্রীদের সঙ্গী হয়েছেনন তিনি। অভিজ্ঞতার এ হেন ঈর্ষণীয় রেকর্ড যাঁর ঝুলিতে সেই পেমবা শেরপা (৪৭) নিজেই নিখোঁজ হয়ে গেলেন পর্বতের পথে।
জম্মু ও কাশ্মীরের কারাকোরাম পর্বতমালার সাসের কাংরি (৭,৬৭২ মিটার) শৃঙ্গ জয় করে শুক্রবার ফিরছিল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন অব কৃষ্ণনগর (ম্যাক) ও পুণের এক যৌথ অভিযাত্রী দল। অভিযাত্রীদের মধ্যে ছিলেন কৃষ্ণনগরের দলটির সদস্য এবং রাজ্যের পরিচিত পর্বতারোহী বসন্ত সিংহরায়। দলে পেমবা ও তাঁর দাদা পাসাং-সহ আরও কয়েক জন শেরপা ছিলেন। ১ নম্বর ক্যাম্পে ফেরার সময় আচমকা পেমবার দেখা না পেয়ে সহ-অভিযাত্রীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি।
পেমবার পরিবার শনিবার জানায়, সাসের কাংরি-৪ শৃঙ্গ অভিযানে পর্বতারোহী দলটির সঙ্গে যান পেমবা। শুক্রবার দুপুরে বসন্তদের সঙ্গে শৃঙ্গ জয় করেন পেমবাও। বিকেলে ফেরার পথে ক্যাম্পে পৌঁছনোর আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সহ-অভিযাত্রী ও অভিজ্ঞ শেরপাদের অনুমান, বরফের কোথাও লুকোনো খাঁজে আটকে গিয়ে থাকতে পারেন পেমবা। ঘটনার সময় ওই পথে ছিল ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) একটি দল। তারাও উদ্ধার অভিযানে
শামিল হন। আজ, রবিবার সকাল থেকে ফের অভিযানে নামার কথা আইটিবিপি’র।
শুক্রবার সন্ধেয় আইটিবিপি’র এক প্রতিনিধির মাধ্যমেই দার্জিলিঙের কাছে আপার গাঁধী রোডে পেমবার বাড়িতে খবর যায়। পেমবার স্ত্রী চাখপা এ দিন বলেন, ‘‘আজ সকাল থেকে আর কোনও খবর আসেনি।’’ পরিবারের সকলেরই এখন প্রার্থনা, অলৌকিক কিছু ঘটুক।
গত ২০ জুন কলকাতা থেকে বসন্তদের সঙ্গে রওনা হয়েছিলেন পেমবারা। ম্যাক-এর সদস্য অশোক রায়ের কথায়, ‘‘পেমবা আমাদের সকলের পরমাত্মীয়। পাহাড়ের নেশা তাঁর রক্তে। ওঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এটা মানতে পারছি না।’’ হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)-এর সদস্য অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘পেমবা, পাসাংরা ভীষণ দক্ষ। ম্যাকের সঙ্গে একাধিক অভিযানে সামিল হয়েছে। তাই খবরটা শোনার পর থেকে উদ্বেগে রয়েছি। কী ভাবে কী হয়েছে বিশদে খোঁজ নিচ্ছি।’’