Rupashree Project

Rupashree: ধার মেটাতে, বেড়াতে যেতেও ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে নাম লেখানোর হিড়িক, তালিকায় বিবাহিতরাও

প্রশাসনের তরফে এ রকম অন্তত দশটি পরিবারকে শো-কজ় করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা কেন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেছে তার কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

Advertisement

সন্দীপ পাল

নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়ের আয়োজনের জন্য রূপশ্রী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার বেশি নয়, এমন পরিবারের বিবাহযোগ্য মেয়েরা প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। কিন্তু সেই প্রকল্পে জমা পড়া আবেদন খতিয়ে দেখতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ নাকাশিপাড়া ব্লকের কর্তাদের।

Advertisement

ব্লক অফিস সূত্রের খবর, খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যাচ্ছে, কেউ পুরনো ঋণ পরিশোধ করতে, কেউ বেড়াতে যাওয়ার জন্য, কেউ আবার অন্য কোনও শখ মেটাতে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে আবেদন করছে। নানা ছুতোয় সরকারের কাছ থেকে টাকা হাতানোর জন্য রূপশ্রীর আবেদনপত্রে কখনও অবস্থাপন্ন বাবাকে দিনমজুর বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তো কখনও বিবাহিত এমনকি সন্তানবতী তরুণীর পরিচয় দেওয়া হচ্ছে অবিবাহিত হিসেবে। বিষয়টি সামনে আসার পরে নড়ে-চড়ে বসেছেন ব্লক অফিসের কর্তারা। প্রশাসনের তরফে এ রকম অন্তত দশটি পরিবারকে শো-কজ় করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা কেন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেছে তার কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

এই সব আবেদনকারীদের এক জন, শালিক গ্রামের পাপিয়া খাতুনের ভাই সেলিম মণ্ডল স্বীকার করেন, “বোনের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার বাবা দিনমজুর, বাড়িতে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। এলাকার সবাই আবেদন করছে বলে আমরাও করেছি।” আবার গিরিধারীপুরের সালমা সুলতানার বাবা জাহাঙ্গির বিশ্বাস দাবি করেন, “আমরা নিয়ম মেনেই আবেদন করেছিলাম। তবে, পরিবারে সমস্যার কারণে এক সপ্তাহ আগে মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। সেই কারণে সমস্যা হয়েছে। ওই আর্থিক সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন।”

Advertisement

বিরোধীদের দাবি, শাসক দলের স্থানীয় নেতা বা পঞ্চায়েত সদস্যদের মদতেই এমন কাজ হচ্ছে। বিজেপির নাকাশিপাড়ার জেলা পরিষদ ১৩-র সহ-সভাপতি দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, “আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেই গরিব এবং মেয়ের বিয়ে দিতে সত্যিই তাঁদের টাকা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সচ্ছলেরাও আবেদন করছেন।” তাঁর দাবি, “এই দুর্নীতির পিছনে রয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা যারা কাটমানির বিনিময়ে। সেই চক্র যে ব্লক প্রশাসন ভাঙার চেষ্টা করছে, শুনে ভাল লাগছে।” নাকাশিপাড়া ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ শেখের পাল্টা দাবি, “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। এটা প্রশাসনের বিষয়, এতে দলের বা কোনও নির্বাচিত সদস্যদের ভূমিকা থাকে না।”

নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, “আমরা প্রত্যেকটি আবেদনপত্র যাচাই করে তবেই টাকা ছাড়ছি। তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু গলদ ধরা পরেছে। তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন