এনআরসি তালিকা থেকে নাম বাদ, অসমের আত্মীয়দের জন্য উদ্বেগ

আইনি পথে যেতে চান পরিজনেরা

আলিপুরদুয়ার জেলার এমন অনেক মহিলাই রয়েছেন যাঁদের অসমের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে হয়েছে। অসম সীমানা লাগোয়া বারবিশা বা লাগোয়া এলাকায় এমন মহিলাদের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৬
Share:

ছবি: সংগৃহীত

শনিবারই নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে অসম সীমানার ওপারে। আর সেই তালিকায় বাড়ির মেয়েদের নাম থাকায় এ বার আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন সীমানার এ পারের বাসিন্দারাও। তবে আইনি লড়াই লড়া যাবে কী করে, সে জন্য অর্থই বা আসবে কোথা থেকে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকে।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলার এমন অনেক মহিলাই রয়েছেন যাঁদের অসমের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে হয়েছে। অসম সীমানা লাগোয়া বারবিশা বা লাগোয়া এলাকায় এমন মহিলাদের সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। এক বছর আগে অসমে এনআরসির খসড়া তালিকা প্রকাশের সময় দেখা গিয়েছিল, যাঁদের অনেকের নামই তাতে নেই। ফলে সরকারি নিয়ম মেনে ফের আবেদন করেন তাঁরা। এই অবস্থায় চূড়ান্ত তালিকায় সেই নামগুলি এলো কি না তা জানতে শনিবার সকাল থেকেই উৎকণ্ঠা ছিল গোটা বারবিশার। অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, অনেকের নাম তালিকায় উঠলেও, এলাকার এমন অনেক মহিলা রয়েছেন যাঁদের নাম নেই।

এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় অসমের শ্রীরামপুরে বিয়ে হওয়া দিদির নাম যে নেই তা শনিবারই জেনে গিয়েছিলেন পাকড়িগুড়ির বাসিন্দা শম্ভু বর্মণ। রবিবার ভোর হতে না হতেই দিদির বাড়িতে রওনা হন তিনি। শম্ভুবাবুর কথায়, ‘‘দিদির সব নথিই জমা করা ছিল। তবুও নাম ওঠেনি। এখন কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। সবাই বলছে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। এখন তারই প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। ট্রাইব্যুনালে গেলে আরও কোনও নথির প্রয়োজন হয় কি না সে সব খোঁজ করার চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

ফোনে এনআরসি-তে নাম না ওঠা বোনের কান্নার শব্দ শুনে শনিবারই ভেঙে পড়েছিলেন ভল্কা বারবিশা ২ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুবলচন্দ্র দাস। রবিবার ভাইকে বোনের বাড়িতে পাঠান তিনি। সুবলবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে ট্রাইব্যুনালে তো যাবই। তারপর প্রয়োজনে আমরা হাইকোর্টেও যাব। সেজন্য যাবতীয় নথি একত্রিত করছি।’’ তবে আইনি লড়াই লড়া যাবে কী করে তা নিয়ে বিভ্রান্তও অনেকে। ভল্কার বাসিন্দা সুকুমার রায়ের কথায়, অসমে বিয়ে হওয়া দিদির এনআরসিতে নাম ওঠেনি। এ দিন দিদির ওখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। আইনি লড়াই লড়তে গেলে অর্থই বা কোথা থেকে আসবে জানি না।

সুকুমারবাবুর মতোই বারবিশার অনেকেই এনআরসিতে বাড়ির মেয়েদের নাম না ওঠা নিয়ে রবিবারও উদ্বিগ্ন ছিলেন। যাঁদের অনেকে এ দিন অসমে তাঁদের আত্মীয়দের বাড়িতে ছুটে যান। তবে এনআরসি নিয়ে অসম সীমানার পরিস্থিতি এ দিনও স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি জেলার পুলিশ কর্তাদের। সীমানা লাগোয়া এলাকায় পুলিশের কড়া নজরদারিও চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন