আঁধারে আলো

আজানের সুর আর ঘণ্টাধ্বনি অমলিন তালপুকুরে

বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকা যখন জ্বলছে, বিপদটা তখনই আঁচ করতে পেরেছিলেন তালপুকুরের সালাউদ্দিন ঘরামি, সুবিদ আলি গাজি, অরুণ বিশ্বাস, গোপাল খাঁড়ারা। কালী মন্দিরের সামনেই মিষ্টির দোকান অরুণবাবুর।

Advertisement

নির্মল বসু

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ১৩:৩৪
Share:

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই আজানের সুর ভেসে আসছে। ঘণ্টার শব্দে মন্দিরে ভিড় করছেন ভক্তেরা।

Advertisement

কয়েক কিলোমিটার দূরে বসিরহাট শহর যখন বোমা-গুলির শব্দে উত্তপ্ত, তখন চাপা উত্তেজনা বুকে নিয়েও সম্প্রীতির সুরটি বেঁধে রেখেছেন হাসনাবাদের আমলানি পঞ্চায়েতের তালপুকুরের মানুষ।

শতাব্দী প্রাচীন কালী মন্দির এবং মসজিদ রয়েছে এই গ্রামটিতে। এই দুই ধর্মস্থানের মধ্যে দূরত্ব মেরেকেটে কয়েক গজ। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়েরই মানুষ থাকেন এখানে। পাশের গ্রাম কুমোরপুকুরে বিশাল সম্প্রীতির মেলা বসে দীর্ঘ কয়েক
বছর ধরে।

Advertisement

বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকা যখন জ্বলছে, বিপদটা তখনই আঁচ করতে পেরেছিলেন তালপুকুরের সালাউদ্দিন ঘরামি, সুবিদ আলি গাজি, অরুণ বিশ্বাস, গোপাল খাঁড়ারা। কালী মন্দিরের সামনেই মিষ্টির দোকান অরুণবাবুর। তিনি জানালেন, গ্রামের পাঁচ জন বৈঠকে বসেন। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, বাইরের লোকজন ঢুকে গোলমাল পাকাতে পারে এই এলাকাতেও। তা আটকাতে আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে বলে ঠিক করেন সকলে।

সালাউদ্দিন, গোপালরা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিন নিয়ম করে রাতপাহারার ব্যবস্থা করেছি। ঠিক করেছি, অবাঞ্ছিত কাউকে এলাকা ঢুকে গোলমাল পাকাতে দেওয়া হবে না। আমাদের এলাকায় অনেক দিন ধরে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বাস করেন। একের উৎসবে-পরবে অন্য জন সামিল হন। এখানকার পরিবেশ কিছুতেই দূষিত হতে দেওয়া যাবে না।’’

এলাকায় শান্তির এই বাতাবরণে অশান্তির যাতে কোনও আঁচ না পড়ে, সে জন্য পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে গ্রামে। সুবিদ আলিও বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষকে বারবার বলা হচ্ছে, কেউ যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেন। কেউ যেন গুজব না ছড়ান।’’

সব মিলিয়ে আজান আর ঘণ্টার সুরটি অমলিন তালপুকুরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন