গেদে স্টেশনে রেল অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা টিকিটের ছাত্রকে আটক করেছিল আরপিএফ। তার জেরে গেদে স্টেশনে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে আরপিএফ ছাত্রকে ছেড়ে অভিযুক্ত জওয়ানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার স্বর্ণখালিতে টিউশন পড়তে যাচ্ছিলেন মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভঙ্কর বিশ্বাস। ট্রেনেই তাঁর যাওয়ার কথা ছিল। সেই সময়ে এক আরপিএফ জওয়ান তাঁকে ধরে টিকিট দেখতে চান। শুভঙ্কর তা দেখাতে না পারায় তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়।
খবর পেয়ে শুভঙ্করের বাবা জগদীশ বিশ্বাস ও মামা তারক মণ্ডল স্টেশনে আসেন। অভিযোগ, কথা বলতে গেলেও তাঁদের কাছেও টিকিট দেখতে চাওয়া হয়। টিকিট দেখাতে না পারায় তাঁদেরও আটক করা হয়েছিল। খানিক পরে জগদীশকে ছাড়া হলে তিনি গ্রামে ফিরে সকলকে জানান। গ্রামের লোকজন স্টেশনে এসে ছাত্র ও তাঁর মামাকে ছাড়ার দাবি জানাতে থাকেন। আরপিএফ তাতে রাজি না হওয়ায় রেল অবরোধ করা হয়।
আরও পড়ুন: জীবিত স্ত্রীর ‘শ্রাদ্ধ’, ধৃত
আরপিএফের দাবি, ছাত্রটি গেদে স্টেশনে এক মহিলার হাতে টিকিট দিতে যায়। মহিলার আচরণ ছিল সন্দেহজনক। কর্তব্যরত জওয়ান ছাত্রকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। টিকিটও দেখাতে পারেননি। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন জওয়ান। জগদীশ পাল্টা বলেন, “আমার ছেলে কিছুই জানত না। এক জন তার হাতে টিকিট দিয়ে মহিলার কাছে পৌঁছে দিতে বলেছিল। তাঁর পরিচয় আমার ছেলের জানা কথা নয়! কেন তাকে আটকে মারধর করা হল? আমাদের কেন হেনস্থা করা হল, হুমকি দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হল?”
আরও পড়ুন: পথে জঞ্জাল, পাশ কাটিয়ে প্রচার-মিছিল
গোলমালের খবর পেয়ে স্টেশনে চলে আসেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীও। কারও-কারও হাতে দলের পতাকাও ছিল। স্থানীয় মাটিয়ারি-বানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, তৃণমূলের প্রদীপ বিশ্বাসের অভিযোগ, “বেশ কিছু দিন ধরেই গেদে স্টেশনে যাত্রীদের হয়রান করছে আরপিএফের ওই জওয়ান। এই নিয়ে সকলের রাগ ছিল। এ দিন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।”
যদিও আরপিএফের দাবি, গেদে আন্তর্জাতিক সীমান্তের স্টেশন। নানা রকম মানুষ যাতায়াত করেন। আবার চোরাচালানও হয়। দিন কয়েক আগে এক মহিলা কাশির সিরাপ নিয়ে ধরা পড়েছিলেন। আরপিএফ রানাঘাট আউটপোস্টের ইনস্পেক্টর অসীম দাস বলেন, “স্টেশনটির নিরাপত্তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেটির আচরণও ছিল সন্দেহজনক। তাই তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হবে।”