জামিনের শুনানি চলছিল তমলুকের আদালতে। তখনই আদালত কক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়লেন পিনকন অর্থ লগ্নি গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর মৌসুমি রায়। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় আদালত) মৌ চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হয় পিনকনের কর্ণধার মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী ও সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর মৌসুমিকে। হাজির করানো হয় ললিতা সারোগি নামে সংস্থার অন্য এক ডিরেক্টরকেও। দু’জনকেই ডিরেক্টরেট অব ইকনমিক অফেন্স বা ডিইও-র হেফাজতে ১১ দিন রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
১৯ ফেব্রুয়ারি খেজুরি থানায় একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ডিইও-র তদন্তকারীরা। ডিইও সূত্রের খবর, আমানতকারীদের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে রাজস্থান পুলিশের স্পেশ্যাল অপরেশন গ্রুপ গত ২ নভেম্বর পিনকন-প্রধান মনোরঞ্জন-সহ চার জনকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করে। ১০ নভেম্বর কলকাতা ও হুগলি থেকে ধরা হয় সংস্থার আরও পাঁচ ডিরেক্টরকে। সোমবার বাঘা যতীন এবং লেক টাউন থানার বাঙুর এলাকায় ধরা পড়েন মৌসুমি ও ললিতা।
দুই মহিলার আইনজীবীরা এ দিন আদালতে জানান, মৌসুমি ও ললিতা ২০০৯ সালে পিনকনে ডিরেক্টর-পদে নিযুক্ত হন। পরের বছরই পদত্যাগ করেন। আমানতকারীরা তার অনেক পরে সংস্থায় টাকা জমা দেন এবং তারও পরে অভিযোগ দায়ের করেন। ফলে সেই অভিযোগ এই দু’জনের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য নয়। মৌসুমি হৃদ্রোগী এবং তাঁর চিকিৎসা চলছে। তাঁর ১০ বছরের সন্তানও অসুস্থ বলে জানান আইনজীবী। তাঁর আর্জি, দুই মহিলাকেই জামিন দেওয়া হোক।
সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌমেন দত্ত জামিনের বিরোধিতা করে বলেন মৌসুমি ও ললিতা ওই লগ্নি সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত। সংস্থার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন তাঁরা। তাই তদন্তের স্বার্থে তাঁদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই ডিরেক্টরকে নিয়ে পিনকন গোষ্ঠীর বিভিন্ন অফিসে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, সোমবার রাতে গ্রেফতারের পরে এবং মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজির করানোর আগে মৌসুমির মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাঁকে সুস্থ ঘোষনা করেছেন। তার পরেও তিনি আদালত কক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।