বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি সূত্রে খবর, ভোটমুখী পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা স্বচ্ছতা ছিল আলোচনার বিষয়।
গত ২৮ নভেম্বর বঙ্গে এসআইআর চালু হওয়ার পর থেকে প্রচুর ভুয়ো ভোটারের সন্ধান মিলেছে বলে অভিযোগ। তেমনই অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের বাংলা ছাড়ার হিড়িকও দেখা গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ভুয়ো এবং অবৈধ ভোটারমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির লক্ষ্যে যা যা তাঁদের দলের তরফে করণীয়, তা নিয়ে মোদীর কথা হয়েছে বলে বিজেপি সংসদীয় দল সূত্রের খবর।
বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর নির্দেশ, দলের প্রত্যেক সাংসদকে নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ নিয়ে প্রচার জোরদার করতে হবে। তা ছাড়া সাংসদের উদ্যোগে এলাকায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে বলা হয়েছে। জনসংযোগ বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসআইআর নিয়ে ‘সঠিক ভাষ্য’ তুলে ধরার ক্ষেত্রে সাংসদদের সক্রিয় হতেও প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন বলে খবর।
তা ছাড়া এসআইআরের ফলে ভোটার তালিকায় কারা থাকবেন, কারা বাদ যাবেন, কাদের (রাজনৈতিক দল) ভোটার কমবে, কার ভোটার বাড়বে, সে সব নিয়ে কথা বলার দরকার নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, এলাকায় কোনও অবৈধ ভোটার থাকবে না— শুধু এই ভাষ্য নিয়ে এগোতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভায় বিজেপির সাংসদ রয়েছেন ১২ জন। রাজ্যসভায় রয়েছেন দু’জন। মঙ্গলবার তাঁরা সকলেই বৈঠকে ছিলেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর।বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ভাল করেই জানেন বাংলার আইন-শৃঙ্খলার কথা। এ নিয়ে তাঁকে নতুন করে কিছু জানানোর প্রয়োজন হয়নি। উনি প্রত্যেক রাজ্যের দলীয় সাংসদদের সঙ্গে কথা বলছেন। কর্মীরা কেমন আছেন, এ সব নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূল তো যাবেই। এসআইআর বন্ধ হলেও, ইডি-সিবিআইয়ের দরজায় তালা লাগালেও তৃণমূল আগামী বিধানসভা ভোটেই বিদায় নেবে।’’
অন্য দিকে, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪৬.২০ লক্ষ ফর্ম অসংগৃহীত থেকে গিয়েছে। তার মধ্যে মৃত প্রায় ২২.২৮ লক্ষ, নিখোঁজ প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ, প্রায় ১৬.২২ লক্ষ ঠিকানা বদল এবং প্রায় ১ লক্ষ ভুয়ো ভোটার থাকতে পারেন।
এসআইআরের সবক’টি পর্যায়ের সময়সীমা সাতদিন করে বাড়িয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এনুমারেশনের সময় রয়েছে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বুধবার থেকে দিনের তথ্য দিনেই আপলোড করার নির্দেশ রয়েছে।