হোটেল মালিককে চড়, অভিযুক্ত পুলিশকর্তা

মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার কাজ সেরে খাবার খেতে একটি হোটেলে গিয়েছিলেন মেখলিগঞ্জের এসডিপিও আশিস সুব্বা। ‘খাবার দিতে দেরি হওয়ায়’ শিলিগুড়ির সেই হোটেলের মালিককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে আশিসবাবুর বিরুদ্ধে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

হোটেল মালিককে নিগ্রহের সিসিটিভি ফুটেজ।

মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার কাজ সেরে খাবার খেতে একটি হোটেলে গিয়েছিলেন মেখলিগঞ্জের এসডিপিও আশিস সুব্বা। ‘খাবার দিতে দেরি হওয়ায়’ শিলিগুড়ির সেই হোটেলের মালিককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে আশিসবাবুর বিরুদ্ধে।

Advertisement

সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রধাননগর থানা এলাকার এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। হোটেল মালিকদের সংগঠনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। জনতার সামনে এসডিপিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু, হোটেল মালিক অম্লান রায়ের নাকে, গালে রক্তের দাগ, ভাঙাচোরা চশমা দেখে জনতা এসডিপিওকে প্রায় ঘেরাও করে ফেলে। প্রধাননগর থানার পুলিশ গিয়ে শেষপর্যন্ত এসডিপিওকে সরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ক্ষুব্ধ জনতা এসডিপিও-র গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে একজন ডিসি পদমর্যাদার অফিসার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। জখম অম্লানবাবুকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা জানান, প্রধাননগর থানায় এসডিপিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে এসডিপিও আশিসবাবুর দাবি, তিনি মারধর করেননি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘খাবার দিতে বলার পরেও অযথা দেরি করা হচ্ছিল। সেই সময় কথা কাটাকাটি হয়। মারধরের প্রশ্নই নেই।’’ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

কিন্তু মালিকপক্ষের তরফে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দাবি করা হয়েছে, প্রথমে হোটেল বন্ধের হুমকি দেন আশিসবাবু। তারপরে এসডিপিও উঠে গিয়ে কী ভাবে অম্লানবাবুকে মারধর করেছেন, তার রেকর্ড রয়েছে। হোটেলের তরফে সেই ফুটেজ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেখলিগঞ্জের এসডিপিও মুখ্যমন্ত্রীর সফরের নিরাপত্তার কাজে শিলিগুড়িতে এসেছেন। বেলা ৩টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী সুকনা বনবাংলোয় ঢোকার পরে এসডিপিও প্রধাননগরে একটি হোটেল যান। কিছুক্ষণ সেখানে থেকে সাদা পোশাকে খাবারের হোটেলে যান। অম্লানবাবুর দাবি, ‘‘খাবারের অর্ডার দেওয়ার পরে কোন খাবারটা আগে দেওয়া হবে, সেটা জানতে চাওয়া হয়। তা নিয়ে কথাবার্তার সময়ে আচমকা উনি ক্ষেপে যান।’’ মালিকের অভিযোগ, ওই সময় আশিসবাবু নিজেকে পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে দু’মিনিটে হোটেল বন্ধ করে দিতে পারেন বলে হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘‘তার প্রতিবাদ করায় উনি তখন উঠে এসে আমাকে মুখে চড় মারেন। আমার চশমা টুকরো-টুকরো হয়ে যায়। নাক কেটে রক্ত পড়তে থাকে। হোটেলের কর্মীরা চেঁচামেচি শুরু করেন।’’ এর পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এসডিপিওর দেহরক্ষী ও গাড়ির চালক। পরে প্রধাননগর থানার পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মালিকপক্ষের তরফে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement