ধর্মঘটে সচল রইল রাজ্য, তবে রাস্তায় কম বেরোলেন মানুষ, গোলমাল বিক্ষিপ্ত

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটে তেমন কোনও প্রভাব পড়ল না রাজ্যে। যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক। মোটামুটি সময়েই চলছে ট্রেন। সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস, অটো, ট্যাক্সি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:৫০
Share:

উল্টোডাঙ্গায় স্বাভাবিক যান চলাচল। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটে তেমন কোনও প্রভাব পড়ল না রাজ্যে। যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক। মোটামুটি সময়েই চলছে ট্রেন। সকাল থেকেই রাস্তায় নেমেছে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস, অটো, ট্যাক্সি।

Advertisement

ধর্মঘট মোকাবিলায় শহরজুড়ে রয়েছে কড়া পুলিশি ব্যবস্থা। কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা একেবারে স্বাভাবিক। কলকাতা জুড়ে সাড়ে তিনশোর বেশি পুলিশ পিকেট রয়েছে। রেল স্টেশন, বিভিন্ন বাস স্টপ, মেট্রো স্টেশন, এমনকী ফেরিঘাটেও রয়েছে আলাদা পুলিশ পিকেট। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় রয়েছেন পুলিশের পদস্থ অফিসাররা। চলছে পুলিশি টহলদারি। ধর্মঘট মোকাবিলায় রাস্তায় রয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টিম।


স্বাভাবিক রয়েছে রেল পরিষেবা। বারুইপুর স্টেশনে শশাঙ্ক মণ্ডলের তোলা ছবি।

Advertisement

বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা বাদ দিলে রাজ্যের অন্যন্য অঞ্চলেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। স্বাভাবিক কাজ হচ্ছে হলদিয়া এবং দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। প্রায় স্বাভাবিক বাস ও রেল পরিষেবা। তবে অন্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বেশ কম। বনধের সকালেই বাস ভাঙচুর হয়েছে উত্তরবঙ্গের দু’টি এলাকায়। কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে এনবিএসটিসির একটি বাসে ঢিল ছোড়া হয়। মালদহে ভাঙচুর করা হয় একটি ডাম্পার। অন্য দিকে শিলিগুড়িতে সিপিএমের সদর দফতরের সামনে মিছিল শুরু হতেই ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য-সহ ৩১ জনকে। বহরমপুর পুরসভায় বাঁশ-লাঠি হাতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। ভাঙা হয় পুরসভার তালা। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন তৃণমূল সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের কান্দিতে ৫২ জন বন‌্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছোটখাটো সমস্যার খবর এসেছে মধ্যমগ্রাম, উলুবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের কয়েকটি এলাকা থেকে। তবে সব ক্ষেত্রেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে পুলিশকে।


বাস চললেও লোক প্রায় নেই। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

এ দিন সকালে ভ্যাটিকানের উদ্দেশে উড়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম বিমানবন্দরে তিনি বলেন, “নিশ্চিন্তে কাজে যান। রাস্তায় কোনও সমস্যায় পড়লে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানান। কড়া ব্যবস্থা নেমে প্রশাসন।” বন্‌ধ মোকাবিলায় অন্য দিনের চেয়ে রাস্তায় বেশি বাস চলছে বলে জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী।

তবে প্রশাসনের তরফে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও রাস্তায় লোকজনের উপস্থিতি কিন্তু বেশ কম। ট্রেন, বাস বেশ ফাঁকা। উধাও সপ্তাহের বাকি দিনের পরিচিত ভিড়। হাজিরা কম স্কুল কলেজ, অফিস কাছারিতেও।

সাধারণ ধর্মঘটে এ রাজ্যের শিল্পাঞ্চলগুলিতে কার্যত কোনও প্রভাবই পড়ল না। ব্যারাকপুর, আসানসোল-দুর্গাপুর বা হলদিয়া ছবিটা সর্বত্র ছিল একই। কাজ হয়েছে স্বাভাবিক নিয়মেই। শ্রমিকদের উপস্থিতির হারও ছিল একেবারেই স্বাভাবিক। যাদের জন্যে এ দিনের ধর্মঘট বলে দাবি ট্রেড ইউনিয়নগুলির, রাজ্যের শিল্পাঞ্চলগুলিতে সেই শ্রমিকরাই আজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সব কলকারখানায় অন্যান্য দিনের মতোই কাজ হয়েছে। নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, টিটাগড়, ব্যারাকপুর— সর্বত্র শ্রমিকেরা যথা সময়ে হাজির হয়েছেন। দু-একটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া এই শিল্পাঞ্চলে এ দিনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। আসানসোলের ছবিটাও প্রায় এক। কারখানাগুলিতে উত্পাদন স্বাভাবিক ভাবেই হচ্ছে। এমনকী এখানে কোনও বন্‌ধ সমর্থককেও দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন...
‘বাংলায় বন্‌ধ হচ্ছে না! ভাঙবে যে, টাকা দেবে সে’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন