মদের বোতল গড়াগড়ি, রেহাই নেই পুলিশেরও

পিকনিক করতে এসে মদ্যপ চিকিৎসকের হাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হল পুলিশের। রবিবার মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ ১৫ জনের একটি দল পিকনিক খেতে আসে ফালাকাটার কুঞ্জনগর ইকো-পার্কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৪
Share:

জখম পুলিশ কর্মী।

পিকনিক করতে এসে মদ্যপ চিকিৎসকের হাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হল পুলিশের। রবিবার মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ ১৫ জনের একটি দল পিকনিক খেতে আসে ফালাকাটার কুঞ্জনগর ইকো-পার্কে। পুলিশ জানায়, তাদের সঙ্গেই ছিলেন মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক বিপ্লবকুমার বিশ্বাস।

Advertisement

অভিযোগ, ওই দলটি প্রচণ্ড জোড়ে বক্স বাজাচ্ছিল। দলের কয়েক জন মিলে বসেছিল মদ্যপানের আসরও। বক্সের শব্দ শুনে প্রথমে বনকর্মীরা বক্সের আওয়াজ কমাতে বললেও ওই চিকিৎসক তা না শুনে উল্টে বনকর্মীদের গালিগালাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ। সেখান থেকে ফিরে বনকর্মীরা পার্কের পুলিশকে জানান। অভিযোগ, পুলিশ গিয়ে নিষেধ করলে বিপ্লববাবু উল্টে পুলিশকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘‘কার সঙ্গে কথা বলছ? আমাকে চেন? আমি আইপিএস অফিসার।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, এ ভাবেই পুলিশকে উল্টোপাল্টা কথা বলে ধমকাতে থাকেন তিনি। পুলিশ জোড় করে তুলে দিতে গেলে তিনি পুলিশকে ধরে মারতেও শুরু করেন বলে অভিযোগ। এক রিজার্ভ পুলিশের গলা টিপে ধরে জোড়ে ঝাঁকাতে থাকেন। সঙ্গে থাকা অন্য পুলিশ কর্মীরা মদ্যপ চিকিৎসককে জাপটে ধরে কোনও রকমে সঙ্গী পুলিশকে বাঁচান। ওই পুলিশ কর্মীর গলায় কালসিটে পড়ে যায়।

Advertisement

অভিযুক্ত ডাক্তার।

মদ খেয়ে বেসামাল চিকিৎসক ভাল দাঁড়াতে পারছিলেন না, তাকাতেও পারছিলেন না। কথাও জড়িয়ে আসছিল। সে অবস্থায় পুলিশকে কেন মারধর করলেন, তা জানতে চাইলে বিপ্লববাবু প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলেন , “পিকনিকে এসে সবাই একটু আধটু খায়। সবাই তো খেয়েছে। আমাকে কেন আটকে রাখা হল? আমি দোষ করিনি।”

ওই চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা অপর এক চিকিৎসক প্রদীপ্ত চক্রবর্তী মারধরের প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন , “দেখুন সবটাই ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছে। ঘটনা তেমন কিছু নয়।”

চিকিৎসকের হাতে জখম পুলিশ কর্মী বিকাশ লিম্বু বলেন, “ওই চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা দলটি প্রচণ্ড জোড়ে বক্স বাজানো ও মদ খেয়ে মাতলামি করতে থাকায় শান্ত হয়ে থাকতে বলি। আমার কথা না শুনে প্রথমে অশ্রব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমরা জোড় করে সরিয়ে দিতে গেলে প্রচণ্ড জোড়ে আমার গলা টিপে ধরে। তখন আমার দম বন্ধ আসছিল। সঙ্গে থাকা অন্যরা আমাকে বাঁচান।”

জলদাপাড়া (দক্ষিণ) রেঞ্জ তথা কুঞ্জনগর ইকো-পার্কে দায়িত্বে থাকা রেঞ্জার খগেশ্বর কার্জি বলেন, “বেসামাল মদ্যপ অবস্থায় চরম অসভ্যতা করেছে ওই চিকিৎসক। বনকর্মীদের গালিগালাজ করেন। পার্কের শান্তি রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশদের মারধর করেন। আমরা অভিযুক্ত চিকিৎসকে আটকে রেখেছিলাম। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন