—ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগে খড়্গপুরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করে পদক্ষেপ শুরু করছে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই সিঁথি থানায় দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও মনে করছেন, ওই মন্তব্য করে দিলীপবাবু আদতে রাজ্যে অশান্তি বাধানোর জন্য প্ররোচনা দিচ্ছেন।
খড়্গপুরে একটি সভায় দিলীপবাবু শুক্রবার বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বলেছিলেন, আমাকে গ্রেফতার করতে এক সেকেন্ডও লাগবে না। আমি বলছি, এক বার আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখান। বাংলা কেঁপে যাবে। দার্জিলিঙে কী আগুন জ্বলছে! আপনার বাড়িতেও আগুন লেগে যাবে।’’ এই মন্তব্যকে শাসক দল মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি হুমকি হিসাবেই দেখছে। দলের শহিদ দিবস ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের প্রস্তুতি উপলক্ষে রবিবার হাজরা মোড়ের সভায় তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিলীপবাবুর ওই বক্তব্যের জবাবে বলেন, ‘‘আপনার যদি ক্ষমতা থাকে, এক জন তৃণমূল কর্মীর গায়ে হাত দিয়ে দেখান! যাদের লড়াই করার সাহস নেই, তারাই এ সব বলে। একটা পতাকা লাগাতে যাদের এজেন্সি ভাড়া করতে হয়, তাদের এ সব বলা ছাড়া রাস্তা নেই।’’
দিলীপবাবুর মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিরোধীরাও। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিজেপির রাজ্য সভাপতির ওই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক। আগেও তিনি কুমন্তব্য করেছেন। আরও দুর্ভাগ্যজনক, তৃণমূলের হুমকি-সংস্কৃতির পথেই হাঁটছে বিজেপিও।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি প্রথম কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তাই তারা সাপের পাঁচ পা দেখছে! বিজেপি নেতারা এমন অশালীন ও উস্কানিমূলক কথা বলছেন, যা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরোধী।’’ বিজেপির দাবি, দিলীপবাবুর ওই মন্তব্যে হুমকি নেই।
দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের বক্তব্য, ‘‘সরকার প্রতিনিয়ত বিজেপি কর্মীদের যে ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে, তাতে রাগ হওয়া স্বাভাবিক। সেই রাগেই একটা কথা দিলীপবাবুর মুখ থেকে বেরিয়েছে। কিন্তু বিজেপি ধ্বংস নয়, গড়ার পক্ষে। আগুন জ্বালানো নয়, নেভানোর পক্ষে।’’ দিলীপবাবুও এ দিন ব্যাখ্যা দেন, ‘‘আমার বক্তব্যের ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে, ওতে হুমকি নেই। বলেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী যেমন পাহা়ড়ে আগুন জ্বালিয়েছেন, তেমন মানুষও ওঁর বাড়িতে আগুন দেবে।’’