ধৃত: বিপ্লব দাস। নিজস্ব চিত্র
একদিন কেটে গিয়েছে। হলদিয়ার বড়বাড়িতে দুই বোন খুনের ঘটনায় পুলিশ এখনও অন্ধকারে। রবিবার খুনের রাতেই নিহত দুই কিশোরী পুতুল ও পূজা দাসের বাবা বিপ্লব দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার হলদিয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক স্বাতী চৌরাসিয়ার এজলাসে তোলা হলে বিপ্লবকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, বিপ্লবের দাবি সে খুন করেনি। জেরায় সে এ-ও দাবি করেছে, তার স্ত্রী সাগরিকা একজনের থেকে টাকা ধার করেছিলেন। ওই ব্যক্তি নাকি রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতেও এসেছিলেন। তাঁর নাম অবশ্য তদন্তকারীদের জানায়নি বিপ্লব। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেও তদন্তকারীরা জেনেছেন, সাগরিকার বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক নিয়ে সংসারে অশান্তি হত।
ঘটনাস্থলে মিলেছে একটি হাঁসুয়া, রক্তমাখা জামা এবং একটি অন্তর্বাস। দরজায় মিলেছে রক্তমাখা একটি ছোট্ট হাতের ছাপ। সাগরিকা নিয়েছিলেন, মূল দরজা বাইরে থেকে তালা বন্ধ ছিল। ওই তালার চাবি বিপ্লবের কাছে পাওয়া গিয়েছে।
এ দিন সাগরিকা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্থানীয়দের দাবি, রক্তমাখা জামাটি বিপ্লবেরই। তবে কি ব়ড় মেয়ে পুতুলের উপর যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেছিল বিপ্লব? বাধা পেয়ে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয় তাকে? ছোট মেয়ে পূজা চিৎকার করে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করলে পিছন থেকে কি তাকে কোপানো হয়েছিল? রক্তমাখা ছোট্ট হাতের ছাপ কি তবে পূজার? সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে ব্রজলালচক-চৈতন্যপুর বড় রাস্তার দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিকেল ৪টে ৪৫ মিনিটে সাইকেলে দেখা গিয়েছে সাগরিকাকে। আর বিপ্লবকে দেখা গিয়েছে সাড়ে ৬টা নাগাদ। সাগরিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি বিকেলে সাড়ে ৪টে নাগাদ মাংস আনতে বেরিয়েছিলেন। প্রতিবেশীরা বিকেলে সওয়া ৫টা নাগাদ উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় বিপ্লবকে দেখেছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) পারিজাত বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিপ্লব, সাগরিকা-সহ বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।’’