ছত্রভঙ্গ: গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসায় পুলিশ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার প্রতিবাদে মিছিল ও জমায়েত। সেখানেই ফের পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বাধল ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের। সভাস্থল থেকে ৭ জনকে তুলে নিয়ে গিয়েও প্রতিবাদীদের চাপে তাঁদের ছেড়ে দিল পুলিশ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সমাবেশ শেষে ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের সঙ্গে করে এলাকায় পৌঁছে দিতে গেলেন সুজন চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ীর মতো বাম নেতারা।
ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের উপর থেকে ইউএপিএ তুলে নিয়ে তাঁদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে সোমবার কলেজ স্ক্যোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল ছিল ‘জমি, জীবিকা, গণতন্ত্র রক্ষা কমিটি’র ডাকে। দলীয় পতাকা ছাড়া সেই কর্মসূচিতে ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, পিডিএসের সমীর ও অনুরাধা পূততুণ্ড-সহ নেতারা। ভিড় হয়েছিল ভালই।
কিন্তু গোলমাল বাধে মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছনোর পরে। মিছিলে আসা কিছু লোকজনের সঙ্গে ওয়াই চ্যানেলে বচসা বাধে পুলিশের। সেই খবর মঞ্চে এসে পৌঁছতেই উত্তেজনা ছ়়ড়ায় ধর্মতলা চত্বরে। উদ্যোক্তা সংগঠনের অভিযোগ, মিছিল থেকে আটক করে ৬ জনকে লালবাজার এবং এক জনকে নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এপিডিআর-সহ কিছু সংগঠনের প্রতিনিধিরা গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আবার ছাড়িয়ে আনেন। তবে বারেবারেই পুলিশের সঙ্গে ঠোকাঠুকি বাধছে দেখে সুজনবাবুরা আর ঝুঁকি নেননি। মিছিলকারীদের তাঁরা পৌঁছতে গিয়েছেন এলাকায়।
রাজভবনে দাবিপত্র পাঠানোর আগে সমাবেশে বিমানবাবু ফের ঝান্ডা ছেড়ে আন্দোলনের কথাই বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের শেষ দিকে পতাকাহীন ভাবে মিছিল হয়েছিল। এখন দেশ ও রাজ্যের যা পরিস্থিতি, ওই পথেই আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’’ কলেজ স্ক্যোয়ারে এ দিন মিছিলের শুরুতে অতি-বাম সংগঠনের কিছু ছাত্র-ছাত্রী বিমানবাবুকে দেখে সিঙ্গুরের তাপসী মালিক, নন্দীগ্রাম, লালগড় নিয়ে কিছু স্লোগান দেয়। তার পরেও বিমানবাবু ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
ভাঙড়ে নিহত মফিজুলের বাবা সুকুর আলি এ দিন বলেন, ‘‘টিভি চ্যানেলে যারা ঘুষ নিচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তাদের কোনও দোষ নেই। আর জোর করে জমি নেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে ইউএপিএ দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে!’’ ইউএপিএ-তে ধৃত আবু হোসেনের বালক-পুত্র শোয়েব আখতার এ দিন তার গ্রামের এক জনের কাঁধে চেপে গোটা মিছিল-পথে স্লোগান দিয়ে গিয়েছে।