সনাতনের খোঁজে জেরা শিশুর মাকে

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামে সনাতনের বাড়িতে নিজের শিশুকন্যাকে নিয়ে থেকে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই মহিলা। ওই শিশুটির উপরে যৌন নির্যাতন এবং শরীরে সুচ বেঁধানোর অভিযোগ উঠেছে সনাতনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪০
Share:

সনাতন গোস্বামী।

সুচবিদ্ধ মৃত শিশুর মাকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠাল পুরুলিয়া আদালত। ওই মহিলাকে জেরা করে তার থেকে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাবে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে নিজের মেয়েকে খুন, ষড়যন্ত্র, যৌন নির্যাতন ও তথ্য-প্রমাণ লোপাটের ধারা যোগ করতে রবিবার বিচারকের কাছে আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। তবে, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সনাতন গোস্বামীর (ঠাকুর) নাগাল পুলিশ এখনও পায়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় বারবার ওই মহিলার কাছে সনাতনের নিরাপদ ও বিশ্বস্ত আশ্রয়ের হদিস জানতে চাওয়া হচ্ছে।

Advertisement

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামে সনাতনের বাড়িতে নিজের শিশুকন্যাকে নিয়ে থেকে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই মহিলা। ওই শিশুটির উপরে যৌন নির্যাতন এবং শরীরে সুচ বেঁধানোর অভিযোগ উঠেছে সনাতনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে সাড়ে তিন বছরের মেয়েটির শরীর থেকে সাতটি সুচ বার করা হয়। শুক্রবার সে মারা যায়। সেখান থেকে শিশুটির মা ও দিদিমাকে আটক করে গোপনীয়তা রাখতে শনিবার পুরুলিয়ার পাড়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। রাতে শিশুর মাকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার দিদিমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ মজুমদার তাঁকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন জানান। তিনি দাবি করেন, ‘‘নির্যাতনে মায়ের ভূমিকা রয়েছে বুঝেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নিজের মেয়ের উপরে লোকটি নির্যাতন করছে জেনে কেন অভিযোগ করলেন না, তা সন্দেহজনক। তদন্তের জন্য তাই তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন।’’

আরও পড়ুন: নির্যাতিতার মা ধৃত পুরুলিয়ায়

Advertisement

এসএসকেএম হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে সাড়ে তিন বছরের মেয়েটির শরীর থেকে সাতটি সুচ বার করা হয়। শুক্রবার সে মারা যায়। —ফাইল চিত্র।

জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ মৃত শিশুর মায়ের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেছে। সেই আইনজীবী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘ওই মহিলার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এফআইআর হয়েছে, তাতে উল্লেখ রয়েছে মেয়ের সঙ্গে তিনিও নির্যাতিতা। তাঁকে অহেতুক গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ অরুণবাবু অবশ্য আদালতকে জানান, সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, সনাতনের হদিস পেতেও মহিলাকে জেরা করা প্রয়োজন। মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শুভদীপ মিত্র অভিযুক্ত মহিলাকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন আদালত চত্বরে বছর বাইশের ওই মহিলাকে নানা প্রশ্ন করা তিনি চুপ করে ছিলেন। পুলিশের দাবি, সনাতনের সঙ্গে শিশুটির সম্পর্ক কেমন ছিল, মায়ের সামনেই সনাতন মেয়েকে নির্যাতন করত কি না, তা ধৃত মহিলার কাছে জানতে চাওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন