লাভপুরের ‘অপহৃতা’র জবানবন্দি, প্রশ্নে বীরভূম পুলিশ

আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ওই তরুণীকে অপরহণের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে উত্তাল হয়েছিল লাভপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৪
Share:

প্রথমা বটব্যাল। —নিজস্ব চিত্র।

লাভপুরে তরুণী ‘অপহরণ-কাণ্ডে’ গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরই বাবা-সহ সহ তিন জনকে। ধৃতদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফজতে চাওয়ার আগে তারা কেন ‘অপহৃত’ তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেয়নি, সোমবার বোলপুর আদালতে সেই প্রশ্নের মুখে পড়ল বীরভূম জেলা পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বিচারকের নির্দেশে গোপন জবানবন্দি দিতে ওই তরুণীকে বোলপুর আদালতে হাজির করাতে হয় পুলিশকে।

Advertisement

আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ওই তরুণীকে অপরহণের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে উত্তাল হয়েছিল লাভপুর। রবিরার তরুণীকে উদ্ধারের পরেই অপহরণের ঘটনাকে ‘সাজানো’ ও ‘পূর্ব পরিকল্পিত’ আখ্যা দিয়েছিল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তরুণীর বাবা তথা বিজেপির জেলা কমিটির নেতা সুপ্রভাত বটব্যাল এবং অন্য দুই ‘অপহরণকারী’ রাজু বটক সরকার ও দীপঙ্কর মণ্ডলকে। পুলিশের দাবি, জেরায় সুপ্রভাতবাবু ‘অপরাধ’ কবুল করেছেন। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁদের বোলপুরের এসিজেএম অরবিন্দ মিশ্রের এজলাসে পেশ করে পুলিশ। তার আগে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল আদালত চত্বর। সংবাদ মাধ্যমেকে এজলাসে থাকতে দেওয়া হয়নি।

বিচারকের এজলাসে মামলাটি উঠতেই অভিযুক্তদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, যাঁকে ঘিরে এত কাণ্ড, সেই তরুণীকে উদ্ধারের ৩১ ঘণ্টা পরেও কেন তাঁর জবানবন্দি নেবে না পুলিশ? অভিযুক্তদের আইনজীবীদের অন্যতম বিজেপি-র জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, তাঁদের ওই সওয়াল শোনার পরে বিচারক নির্দেশ দেন, আগে অপহৃতার গোপন জবানবন্দি হবে। তার পরেই মামলাটি শুনবেন। তদন্তকারী অফিসার বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে ওই তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে তাঁকে এসিজেএমের কাজে নিয়ে আসেন। তার পরেই তিনি বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ২ মণিকুন্তলা রায়ের কাছে জবানবন্দি দেন। এর পরে সুপ্রভাতবাবুকে ১১ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং অন্য দুই ধৃতের জেলা হেফাজতের নির্দেশ দেন এসিজেএম। তরুণীর আর্জিতে তাঁকে পাঠানো হয়েছে সিউড়ির হোমে।

Advertisement

এ দিন বোলপুর আদালত চত্বরে হাজির বিজেপি-র প্রতিনিধি দল লাভপুর-কাণ্ডের সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে। দলের রাজ্য সহ সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী, রাজ্য নেতা রাজীব ভৌমিক বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্ত হলেই সত্য সামনে আসবে।’’ বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ আইন মেনেই কাজ করেছে। কে কী বলছেন, সেটা নিয়ে মন্তব্য করব না। পুলিশ যা বলেছে, তার স্বপক্ষে প্রমাণ রয়েছে। প্রয়োজনে সেটা দেখানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন