শ্যামল মুর্মু।—নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির চিলেকোঠার কড়িকাঠ থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় জঙ্গলমহলের এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। রবিবার, মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগর পল্লির বাসিন্দা শ্যামল মুর্মু (২৬) নামে ওই আধিকারিকের দেহটি মেলে। তিনি ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) ও নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার। পুলিশের ধারণা, অবসাদে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক দীর্ঘদিন মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। একটি সুইসাইড নোট মিলেছে।’’ পুলিশের একটি সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি তিনি। এক জায়গায় লেখা রয়েছে, ‘নয়াগ্রামের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলাম না। আমি তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী’। কলকাতার এক মনোবিদের কাছে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন শ্যামল। সম্প্রতি বিএমওএইচের দায়িত্বও ছাড়তে চান। ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, ‘‘পুজোর আগে আমার অফিসে এসে শ্যামল বিএমওএইচ পদ থেকে অব্যাহতি চান। আমি তাঁকে নিয়মমাফিক আবেদন করতে বলেছিলাম। এর মধ্যে এমন একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল!’’
পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে দু’বছর আগে নয়াগ্রামের বিএমওএইচ পদে যোগ দেন শ্যামল। ঝাড়গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বাবা ও সৎ মা। বছর পাঁচেক আগে শ্যামলের বোনও আত্মহত্যা করেন। পুজো উপলক্ষে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন শ্যামল। রবিবার সন্ধ্যায় বাবা-মা যখন বাড়িতে ছিলেন না, তখনই ঘটনাটি ঘটে।
শ্যামলের বাবা পেশায় রেলকর্মী দুর্গাপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘আমি স্ত্রীকে নিয়ে শিলদার কাছে দেশের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় ফিরে দেখি ওই কাণ্ড।’’ কিন্তু ছেলে কেন এমন করল তা দুর্গাবাবুর কাছে স্পষ্ট নয়। রবিবার রাতেই শ্যামলের দেহ ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে আনা হয়। ময়না-তদন্ত হয় সোমবার।