Tangra Unnatural deaths

স্ত্রী, কন্যাকে খুনের পরে ছেলেকে নিয়ে গাড়িতে বেরিয়ে যান, দু’ঘণ্টা কোথায় কোথায় ঘুরেছেন দে ভাইয়েরা?

জখম দুই ভাই পুলিশের জেরায় দাবি করেছেন, ছেলেকে একটি হাসপাতালে রেখে ‘আত্মহত্যার পরিকল্পনা’ ছিল তাঁদের। কিন্তু ওই কিশোর হাসপাতালে যেতে রাজি হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১০
Share:

অভিষিক্তার মোড়ে স্তম্ভে ধাক্কা দেওয়ার পরে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সেই গাড়ি। —ফাইল চিত্র।

ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ গাড়িতে চেপে বেরিয়ে গিয়েছিলেন দুই ভাই— প্রণয় এবং প্রসূন দে। সঙ্গে ছিল প্রণয়ের ১৪ বছরের পুত্র প্রতীপ দে। রাত ৩টের পরে বাইপাসের ধারে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি স্তম্ভে ধাক্কা দেয় তাঁদের গাড়ি। মাঝে প্রায় দু’ঘণ্টা কোথায় গাড়ি নিয়ে ঘুরেছিলেন তাঁরা? রাস্তায় বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে সে সব প্রশ্নের জবাব জেনেছে পুলিশ। পাশাপাশি, আহত দুই ভাই পুলিশি জেরায় দাবি করেছেন, প্রতীপকে একটি হাসপাতালে রেখে ‘আত্মহত্যার পরিকল্পনা’ ছিল তাঁদের। কিন্তু ওই কিশোর হাসপাতালে যেতে রাজি হয়নি।

Advertisement

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, সুদেষ্ণা দে, রোমি দে, প্রিয়ম্বদা দে-কে খুন করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে ইঙ্গিত, খুনের সময় মঙ্গলবার রাত। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে তিন জনকে খুনের পরে গাড়িতে চেপে ট্যাংরার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান প্রণয়, প্রসূন, প্রতীপ। বিভিন্ন সূত্রে পুলিশ জেনেছে, প্রথমে গাড়ি নিয়ে তাঁরা গিয়েছিলেন বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে। সেই রাস্তা ধরে তাঁরা পৌঁছে যান কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ওঠে তাঁদের গাড়ি। তার পরে এজেসি বোস রোড হয়ে পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে পৌঁছয় প্রণয়দের গাড়ি। সেখান থেকে সায়েন্স সিটি হয়ে ইএম বাইপাসের রাস্তা ধরে গাড়িটি। শেষে রাত ৩টে নাগাদ অভিষিক্তা মোড়ে একটি স্তম্ভে ধাক্কা দেয় সেটি। সেই সময় গাড়িতে ছিলেন প্রণয়, তাঁর পুত্র প্রতীপ এবং ভাই প্রসূন। তিন জনেই গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

তিন জনকে খুনের পরে কোথায় কোথায় গাড়ি নিয়ে ঘুরেছিলেন দে ভাইয়েরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

পুলিশ দুই ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, প্রতীপকে সঙ্গে নিয়ে বার হলেও তাঁকে কোনও হাসপাতালে রেখে ‘আত্মহত্যার পরিকল্পনা’ ছিল দুই ভাইয়ের। দুই ভাইয়ের দাবি, ১৪ বছরের কিশোর প্রতীপ একা হাসপাতালে যেতে রাজি হয়নি। তাই তাকে নিয়েই শেষ পর্যন্ত অভিষিক্তা মোড়ে একটি স্তম্ভে ধাকা দেয় প্রণয়দের গাড়ি। পুলিশ দুই ভাইয়ের এই বয়ান যাচাই করে দেখছে। দুই ভাই আরও দাবি করেছেন, আর্থিক সমস্যার কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের আত্মীয়েরাও সেই দাবি মানতে চাননি। তাঁরা পাল্টা দাবি করেছেন, অভাব, ঋণ নিয়ে এর আগে কখনও কিছু জানায়নি দে পরিবার। তাঁদের জীবনযাপনেও তা ধরা পড়েনি। তা ছাড়া ময়নাতদন্তের রিপোর্ট স্পষ্টই বলছে, পরিবারের তিন মহিলাকে খুন করা হয়েছে। তাই দুই ভাইয়ের সপরিবারে আত্মহত্যার দাবি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement