‘মনুয়া তো নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’

খুন, খুনের পরে বাড়িতে এসে দেখা করে যাওয়া পর্যন্ত টানা ২৫০০ সেকেন্ড (৪২ মিনিট) অজিতের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মনুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

মনুয়া মজুমদার

অনুপম যখন তালা খুলে বাড়িতে ঢুকছিলেন, তখন থেকে শুরু হয়েছিল ঘরের ভিতরে লুকিয়ে থাকা অজিতের সঙ্গে মনুয়ার ফোনে কথোপকথন। এর পরে খুন, খুনের পরে বাড়িতে এসে দেখা করে যাওয়া পর্যন্ত টানা ২৫০০ সেকেন্ড (৪২ মিনিট) অজিতের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মনুয়া। বুধবার বারাসতের অনুপম সিংহ খুনের ঘটনার ৮৬ দিনের মাথায় চার্জশিট দেওয়ার পরে সেখানে এমনই দাবি করেছে পুলিশ। সে সবের ভিত্তিতে অনুপমের স্ত্রী মনুয়া মজুমদারকে এই খুনের মূল অভিযুক্ত দেখিয়ে বুধবার বারাসত আদালতে চার্জশিট পেশ করা হল মনুয়া ও তার সঙ্গী অজিত রায়ের বিরুদ্ধে।

Advertisement

গত ৩ মে খুন হন অনুপম। ওই রাতে ১০টা ৫ মিনিট থেকে শুরু হওয়া সেই ফোনের সব রিপোর্ট থেকে শুরু করে মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত রায়ের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে। এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি বিপ্লব রায় বলেন, ‘‘ঠিক খুনের মুহূর্তে ঘটনাস্থলে না থাকলেও অনেকটা নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেনের মতো সমস্ত কিছু পরিচালনা করে গিয়েছে মনুয়া। কিন্তু তদন্তে সবটাই ধরা পড়ে গিয়েছে।’’ আগামী ১৮ অগস্ট মনুয়া ও অজিতকে আদালতে হাজির করে চার্জশিটের প্রতিলিপি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

দেড়শো পাতারও বেশি ওই চার্জশিটে খুনে ব্যবহৃত লোহার রড, ঘটনাস্থল থেকে মেলা জামার টুকরো, সিগারেটের পোড়া অংশের মতো মোট ২৫টি নমুনাও পেশ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, খুনের দিন মনুয়া যে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, তা দেখে ফেলেছিলেন এক জন। খুনের পরদিন মনুয়া ফোন করে তার এক ভাইকে ঘরে যেতেও বলে। তিনিই প্রথম অনুপমের মৃতদেহ দেখতে পান। এ রকমই ২৪ জনকে সাক্ষীও রাখা হয়েছে চার্জশিটে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিজেপিকে আটকাতে ডাক দিদির

বিপ্লববাবু এ দিন আরও জানান, এই মামলায় ফরেন্সিক পরীক্ষার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। রক্ত, চুল, সিগারেটের টুকরো, অজিতের ছেঁড়া জামার অংশ, অস্ত্র ও গ্লাসে লেগে থাকা আঙুলের ছাপের সঙ্গে মনুয়া ও অজিতের শরীরের ডিএনএ যে মিলে গিয়েছে, চার্জশিটে তারও ফরেন্সিক প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। তবে এ দিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখনও কিছু রিপোর্ট আসা বাকি রয়েছে। সেই রিপোর্ট পেশ করার জন্য পরবর্তীকালে অতিরিক্ত চার্জশিট (সাপ্লিমেন্টারি) দেওয়ার সম্ভাবনাও রেখেছে পুলিশ।

অনুপমকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন করেছিল মনুয়া। খুনের সময়ে এবং তার আগে-পরে সে এক জন দাগী অপরাধীর মতোই ব্যবহার করে গিয়েছে। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে এর স্বপক্ষে একাধিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
কিন্তু খুব সূক্ষ্ম কিছু ঘটনাকে আমল দেয়নি মনুয়া। সেই ভুলই এই তদন্তের কিনারা করতে সাহায্য করেছে।’’ পুলিশও জানিয়েছে, সব দিক বিচার করে অনুপম হত্যাকাণ্ডে মনুয়াকেই মূল চক্রী দেখিয়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement