Cooch Behar SP Controversy

কোচবিহারের এসপি দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিল নবান্ন, ‘শব্দবাজি থামাতে লাঠিপেটা’র ঘটনায় পদক্ষেপ? বদলে কে এলেন

কোচবিহারের পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে। কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি থামাতে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তার পরেই নবান্ন এই পদক্ষেপ করল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ২০:০৩
Share:

কোচবিহারের এসপি পদে থাকাকালীন বিতর্কে জড়িয়েছেন দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

কোচবিহারের পুলিশ সুপারের (এসপি) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে। কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি থামাতে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তার পরেই নবান্ন থেকে এই পদক্ষেপ করা হল। দ্যুতিমানকে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (স্যাপ) থার্ড ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট পদে। তাঁর পরিবর্তে কোচবিহারের নতুন এসপি করা হয়েছে সন্দীপ কাররাকে।

Advertisement

দীপাবলির রাতে বাজি ফাটানোর ‘অপরাধে’ শিশু, মহিলা-সহ বেশ কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল দ্যুতিমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ‘হাফ প্যান্ট এবং স্যান্ডো গেঞ্জি পরে, মাথায় ফেট্টি বেঁধে’ দীপাবলির রাতে বাংলো থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। ‘ডান্ডা হাতে’ মহিলা, শিশু এবং এক স্কুলশিক্ষককে মারধর করেন। দ্যুতিমান নিজে অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফেটেছে। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিয়েছেন মাত্র।

দ্যুতিমানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি বৃহস্পতিবার জারি করেছে নবান্ন। তাঁর জায়গায় যিনি এসেছেন, সেই সন্দীপ ছিলেন আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি পশ্চিম পদে। ওই পদে পাঠানো হয়েছে সোনওয়ানে কুলদীপ সুরেশকে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি) সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে ছিলেন। দ্যুতিমানকে কেন সরানো হল, তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বিতর্কের যোগ আছে কি না, নবান্ন তা খোলসা করেনি। নবান্ন সূত্রে খবর, এটা রুটিন বদলি। তবে অনেকেই মনে করছেন, মারধরের ওই ঘটনার কারণে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল।

Advertisement

কোচবিহারের নতুন পুলিশ সুপার সন্দীপ কাররা। —ফাইল চিত্র।

দীপাবলির রাতের ঘটনার পর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সমাজমাধ্যমে কোচবিহারের এসপি-র আচরণের নিন্দা করেছিলেন। তিনি লেখেন, ‘‘অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় মহিলা এবং শিশুদের মারধর করেছেন পুলিশ সুপার।’’ পর দিন স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধও করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছিল।

কোচবিহার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রেলঘুমটি এলাকায় পুলিশ সুপারের বাংলো। স্থানীয়দের দাবি, এসপি নিজে মারধর করেন। সঙ্গে কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না। মহিলাদের গায়েও হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে। দীপাবলির রাতের ঘটনার বর্ণনা করে দ্যুতিমান বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভেবেছি, এই শেষ হবে, এই শেষ হবে... কিন্তু রাত ১০টা বেজে যায়, ১১টা বেজে যায়, বাজির দাপট থামেনি। (রাত) ১টা অবধি প্রতিনিয়ত বাজি ফাটিয়েছে। আমার স্ত্রী ‘কাউন্ট’ করেছে একসঙ্গে ৬০টা পর্যন্ত বাজি ফেটেছে। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা গিয়ে বারণ করেছে। কেউ কোনও কথা গ্রাহ্য করেননি। তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমার কুকরগুলো চিৎকার করে পাগল হয়ে যাচ্ছিল।’’

দ্যুতিমানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে জামিনে মুক্তি দেয় আদালত। পাঁচ জনকে পুলিশি হেফাজত এবং দু’জনকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, খুনের উদ্দেশে পুলিশকে মারধর, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি, অবৈধ জমায়েতের অভিযোগে যথাযথ ধারায় এফআইআর রুজু করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement