Mahua Moitra

নিশিকান্তের নিশানা জারি, অনড় মহুয়াও

মহুয়া এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেবেন কিনা তা না জানালেও তিনি তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে আক্রমণ করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। লিখেছেন, ‘দুঃখিত শ্রী আদানি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৩
Share:

বাঁ দিক থেকে মহুয়া মৈত্র, নিশিকান্ত দুবে। — ফাইল চিত্র।

‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন বিতর্কে’ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং এথিক্স কমিটির স্নায়ুর যুদ্ধ অব্যাহত। গত কাল রাতেই লোকসভার এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকর জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ২ নভেম্বর মহুয়াকে দ্বিতীয় বারের জন্য হাজিরার সময় দেওয়া হয়েছে। না এলে বিষয়টি সংসদের অবমাননা হিসেবেই গণ্য হবে। অর্থাৎ আর তৃণমূল সাংসদকে তারিখ দেওয়া হবে না। অথচ এখনও পর্যন্ত মহুয়া জানাননি তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এথিক্স কমিটির সামনে যাবেন কি না, তা জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আজ তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি টেক্সক্ট মেসেজেরও।

Advertisement

ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। সেগুলিকে নিয়ে মহুয়াকে নিশানা করেছেন অন্যতম অভিযোগকারী বিজেপি-র সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার সময় নেই অভিযুক্তের। কিন্তু মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য তাঁর অফুরন্ত সময় আছে’। ওই বিজেপি সাংসদের কথায়, ‘সংবাদমাধ্যমের সকল শ্রদ্ধেয় বন্ধুদের জানাচ্ছি, লোকসভার এথিক্স কমিটি এই দুর্নীতির তদন্ত করছে এবং অর্থ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বন্ধক রাখা হয়েছে। কমিটির সামনে যা এসেছে তা গোপনীয়। আমি কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিইনি। এটাই সংসদের মর্যাদা’। এখানেই থামেননি নিশিকান্ত। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সাংসদের বন্ধু হিরানন্দানি হলফনামায় তাঁর বিদেশ যাওয়া, বিদেশে থাকা, মূল্যবান জিনিসপত্র এবং যাতায়াতের খরচ (নগদ) দেওয়ার কথা বলেছেন। এই আবহে এই ঘটনায় কমিটির রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। এটা শাসক-বিরোধী বা নারী-পুরুষের কথা নয়। জাতীয় নিরাপত্তা, দুর্নীতির বিষয়। সংসদের মর্যাদা এবং সংসদ সদস্যদের আচার-আচরণের কথা। দয়া করে সংসদকেই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দিন।

মহুয়া এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেবেন কিনা তা না জানালেও তিনি তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে আক্রমণ করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। লিখেছেন, ‘দুঃখিত শ্রী আদানি। আমি নতিস্বীকার করব না। আপনার অর্থানুকুল্যে তৈরি হওয়া ক্যাঙারু কোর্ট-ও নজর ঘোরাতে পারবে না আপনার আর্থিক কেলেঙ্কারিগুলির থেকে’। এর পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের লিঙ্কও পোস্ট করেছেন মহুয়া। গত রাতে একটি ইংরেজি চ্যানেলকে কৃষ্ণনগরের সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘হিরানন্দানি আমাকে টাকা দেবে কী, প্রয়োজনে আমি হিরানন্দানিকে টাকা দেব আদানির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য! যদি দর্শন হিরানন্দানি এতটাই দেশদ্রোহী হবেন, তা হলে কেন তাঁকে উত্তরপ্রদেশে তিরিশ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য গড়তে দেওয়া হল?’’

Advertisement

অন্য দিকে, মহুয়ার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগের ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় বলে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর ওই অভিযোগের দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন মহুয়া। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি প্রথমে টাকা নিয়ে প্রশ্নের অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু সে বিষয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে না পেরে এখন জাতীয় নিরাপত্তার দিকে বিষয়টি ঘোরাতে চাইছে।’’

এর আগে সাক্ষাৎকারে নিশিকান্তকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মহুয়া। তাঁকে ‘ঝাড়খণ্ডি পিট বুল’ আখ্যা দেন তিনি। তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘ওঁরা ভুল মানুষের সঙ্গে ঝামেলা করতে এসেছেন। আমি জীবনের সব কিছু ছেড়ে এখানে এসেছি। আর কোনও ঝাড়খণ্ডি পিট বুল এবং প্রাক্তন ব্যক্তিগত সম্পর্ক আমার শেষ ডেকে আনতে পারে না। সত্যিটা খুঁজে বার করতেই থাকব। ২০২৪ সালে কী হবে, তা দেখতে পারবেন সকলেই।’’ ‘পিট বুল’ কটাক্ষের জবাবে নিশিকান্তের উত্তর, ‘‘আমাকে পিট বুল (কুকুর) বলে গোটা বিহার এবং ঝাড়খণ্ডকে অপমান করেছেন মহুয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন