মাঠ মেলেনি সভার জন্য। তাই দলীয় এক সমর্থকের ধান খেতে মঞ্চ বাঁধছে বিজেপি। মাঝে আর দু’দিন। ৭ তারিখ এই শহর থেকেই রাজ্যের ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র প্রথম রথটি রওনা করিয়ে দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। জেলা বিজেপির অভিযোগ, এখনও দলীয় কর্মীদের পথ আটকে সেই অনুষ্ঠানকে ম্লান করতে চাইছে তৃণমূল। তাদের আরও দাবি, অমিত যেখানে থাকবেন বলে ঠিক হয়েছে, সেই সার্কিট হাউসও আগাম বুক করে রেখেছে রাজ্যের শাসকদল। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
মঙ্গলবার কোচবিহার শহরে এসে পৌঁছেছেন অমিতের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক। সভাস্থলের খুব কাছেই একটি হোটেলে উঠেছেন তিনি। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমারও এ দিনই কোচবিহার পৌঁছন। তিনি জেলা পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করেন। প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, অমিত শাহ জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান। তিনি শহরে ঢুকলে জেলা পুলিশের উপরে নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তাবে। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর গাড়ির সামনে থাকবে লিড মোবাইল। পিছনে থাকবে পুলিশের গাড়ি। এ ছাড়াও একজন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারকে তাঁর ‘পিএসও’ (পার্সোনাল সিকিউরিটি অফিসার) হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। কাদের সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রয়োজন অনুসারে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যাঁর জন্য পুলিশ-প্রশাসনে এত তোড়জোড়, তাঁর সভায় যোগ দেওয়া থেকে দলীয় কর্মীদের আটকাতে তৃণমূলই ছক কষছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাঁদের এক নেতা বলেন, ‘‘প্রশাসনিকস্তরে কী হচ্ছে জানি না। সে সব তো নিয়মমাফিক করতেই হবে। কিন্তু আসল কথা হল, আমাদের কর্মীদের আটকাতে তৃণমূল চেষ্টার অন্ত রাখছে না।’’
কী সেই ‘চেষ্টা’? বিজেপির অভিযোগ, তাদের কর্মীদের ভয় দেখানো থেকে শুরু করে বেসরকারি বাস ও গাড়ি মালিকদের হুমকি দেওয়া, রথযাত্রার দিন পথ আটকে একাধিক মোড়ে সভা— সবই করার ছক কষেছে তৃণমূল। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে শুরু করে দলের নেতা-বিধায়করা সকলেই পাল্টা দাবি করছেন, বিজেপিই বাইরে থেকে লোক এনে গোলমালের ছক কষছে। সার্কিট হাউসও তৃণমূল আগাম বুক করে রেখেছে বলে অভিযোগ বিজেপির। এই নিয়ে জেলাশাসক কৌশিক সাহা কিছু বলতে চাননি। তবে প্রশাসনের শীর্ষস্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি কারও নাম উল্লেখ করে বুকিং চায়নি। অমিত শাহের নাম করে বুকিং চাইলে অবশ্যই জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রথযাত্রার পরের দিন একই পথে ‘পবিত্র যাত্রা’ করবে তৃণমূল। এ দিন দলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পরে তিনি বলেন, “জেলায় বিজেপির লোক নেই। ওরা বাইরে থেকে লোক আনবে।”