এম টি কৃষ্ণবাবু
ঠেকে শিখছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ।
ব্যবহার বা বিলি-বন্দোবস্ত না-করে জমি অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখলেই গন্ধে গন্ধে হাজির হয় দখলদারেরা। তাদের দৌরাত্ম্যের দৌড় কত দূর, তারাতলার বেদখল জমি উদ্ধার করতে গিয়েই সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। তাই দখলদারের উৎপাত এড়াতে এ বার নিজেদের সব ফাঁকা জমি টেন্ডার বা দরপত্র ডেকে বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দর। সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু বুধবার এ কথা জানান।
তারাতলার পি-৫১ হাইড রোডে বন্দরের প্রায় তিন একর জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছিল চলচ্চিত্র প্রযোজক সংস্থা ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। অভিযোগ, শাসক দলের প্রশ্রয়ের হাত ছিল ওই সংস্থার মাথায়। সেই জন্য বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়েও জমিটি মুক্ত করা যাচ্ছিল না। ব্যাপক টানাপড়েনের পরে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে সম্প্রতি দখলদার হটানো গিয়েছে। বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ওই জমি আমরা পুনরুদ্ধার করেছি। ভোট পর্ব মিটলেই তার টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কোনও জমিই ফাঁকা ফেলে রাখব না।’’
ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়ার পরে বন্দরের পূর্বতন চেয়ারম্যান আর পি এস কাহালোঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিশাখাপত্তনম পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কৃষ্ণবাবু কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন। এ দিন তিনি জানান, কয়েক বছর ধরে ড্রেজিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না-মেলায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে ড্রেজিংয়ের জন্য ফি-বছর খরচ হয় প্রায় ৪৮০ কোটি টাকা। কিন্তু চার বছর ধরে কেন্দ্রের কাছ থেকে যথেষ্ট টাকা মিলছে না। ড্রেজিংয়ের জন্য কেন্দ্র ২০১৩-’১৪ সালে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টকে দিয়েছিল ৪৭৯ টাকা। ২০১৪-’১৫ সালে সেটা কমে হয় ৩৫০ কোটি। ২০১৫-’১৬ সালে আরও কমে দাঁড়ায় ২৭৫ কোটি টাকায়। কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘ড্রেজিংয়ের বরাদ্দ চার বছর ধরে কমেই চলেছে। এই খাতে কেন্দ্রের কাছে কলকাতা বন্দরের পাওনা ৯২৩ কোটি টাকা।’’
বন্দরের অন্য এক আধিকারিক জানান, অবসর নেওয়া ৩০ হাজার কর্মীর পেনশন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পেনশন খাতেই বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা লাগে। টানাটানির সংসারে বিগত আর্থিক বছরে বন্দরের ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি টাকা।