Prabir Ghosal

Prabir Ghoshal: মানসিক ভাবে তিনি নেই বিজেপি-তে, শুভেন্দুর থাকা নিয়েও সংশয় রয়েছে প্রবীরের মনে

তৃণমূল-মুখপত্রে বুধবার প্রকাশিত হয়েছে উত্তরপাড়ার বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষালের নিবন্ধ। সঙ্গে জোরাল হয়েছে তাঁর দলছাড়ার জল্পনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২১ ১৩:৪৮
Share:

শুভেন্দু এবং প্রবীর। ফাইল ছবি।

তৃণমূল-মুখপত্রের উত্তর সম্পাদকীয়তে বুধবার প্রকাশিত হয়েছে উত্তরপাড়ার বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষালের নিবন্ধ। সঙ্গে জোরাল হয়েছে তাঁর দলছাড়ার জল্পনা। সেই জল্পনায় অবসান ঘটাতে কোন্নগরের অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করলেন প্রবীর। সেখানে মানসিক ভাবে তিনি বিজেপি-তে নেই বলে জানিয়েছেন। যদিও বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেননি তিনি। ভোটের সময় থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে দাবি প্রবীরের। কিন্তু এখনই তিনি যোগ দিচ্ছেন না তৃণমূলে। এমনকি বিজেপি-তে শুভেন্দু অধিকারী কতদিন টিকতে পারবেন তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন পরাজিত এই বিজেপি প্রার্থী।

Advertisement

বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকের প্রথমেই তাঁর দিকে প্রশ্ন ধেয়ে এসেছিল, কবে বিজেপি ছাড়ছেন? সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি-তে কোথায়, কী ভাবে আছি নিজেই জানি না। ভোটের আগে রাজ্য কমিটির সদস্য করেছিল আমাকে। ভোটের পর দু’একটি বৈঠকে ডেকেছিল। তা ছাড়া কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা ভোটের পর থেকে যোগাযোগ করেননি, করেনও না।’’ বিজেপি-তে তিনি থাকবেন? এর জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচনের পর থেকেই মানসিক ভাবে বিজেপি-তে নেই।’’ বিজেপি তাঁকে যে ‘যন্ত্রণা’ দিয়েছে তার উল্লেখও করেছেন।

তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গও উঠেছিল এ দিন। সেই প্রসঙ্গে প্রবীর বলেছেন, ‘‘এখনই এ নিয়ে ভাবিনি। এখন লেখালিখি নিয়ে ব্যস্ত আছি।’’ এই প্রসঙ্গ ধরে উঠে আসে তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের যোগাযোগের কথা। তিনি বলেছেন, ‘‘ভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। অনেকেই ফোন করেছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও তৃণমূলের অন্য নেতারাও সমবেদনা জানিয়েছিলেন। এই লেখা প্রকাশের পরও অনেকে ফোন করেছেন।’’ এখনও অনেক তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর ‘কথা’ হলেও সেই দলে ফেরার ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি বলেই দাবি প্রবীরের।

Advertisement

উত্তরপাড়ায় তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়েও বিজেপি-র একাংশের বিরোধিতার কথা মনে করিয়েছেন প্রবীর। সেই প্রসঙ্গেই তিনি টেনে এনেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ। প্রবীর বলেছেন, ‘‘বিজেপি-র অনেক পুরনো কর্মীই শুভেন্দুকে সহ্য করতে পারেন না। হাওড়ার ঘটনাতে তা বেরিয়ে পড়েছে। এই রকম দলে ও কতদিন থাকবে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’’ ত্রিপুরার প্রসঙ্গও এসেছে প্রবীরের গলায়। তাঁর দল বিজেপি ক্ষমতায় থেকে যে আচরণ করছে ত্রিপুরায়, তা উচিত নয় বলেই মনে করেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক।

২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হন প্রবীর। কিন্তু বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে তৃণমূল থেকে পদ্মশিবিরে যোগ দেন তিনি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিজেপি-তে ইনিংস শুরু হয় তাঁর। উত্তরপাড়া বিধানসভা আসনে তাঁকে প্রার্থীও করেছিল কেন্দ্রের শাসকদল। যদিও তৃণমূলপ্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকের কাছে হেরে যান তিনি। বিজেপি-র হয়ে প্রথম বার ভোটে লড়তে গিয়ে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, তিনি মূলত সেকথাই লিখেছেন তৃণমূলের মুখপত্রের উত্তর সম্পাদকীয়তে।

যদিও প্রবীরের বক্তব্য মানতে নারাজ বিজেপি। বিজেপি-র মুখপাত্র প্রণয় রায় বলেছেন, ‘‘একটা নির্দিষ্ট আদর্শকে সামনে রেখে বিজেপি চলছে।অন্য দল বা অন্য জায়গা থেকে যারা আসে বিজেপির নীতি আদর্শ বুঝতে একটু সময় লাগে। আমরা সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে নিয়ে চলার চেষ্টা করি।চন্দনা বাউড়িকে যেমন প্রার্থী করেছি প্রবীর ঘোষালকেও প্রার্থী করেছি।চন্দনা জিতে গেছে প্রবীর ঘোষাল জিততে পারেননি। এখন উনি যদি বলেন দল নয় দল করা যায়না সেটা ওনার সমস্যা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন