West Bengal Recruitment Scam

‘কলকাতার হোটেলে কাজ করতাম, তাপসকে আপেল দিয়ে আসতাম’, বিধায়ক ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রবীরের নয়া দাবি

গত বছর এপ্রিল মাসে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তৃণমূল বিধায়ক তাপসের আপ্তসহায়ক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৪১
Share:

তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৬ সাল থেকে বিধায়কের আপ্তসহায়ক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন বছর চল্লিশের প্রবীর। ফাইল চিত্র ।

রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকেরা তাঁকে বলেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ক্ষমতা তাঁদের নেই। জামিনের শর্ত হিসাবে আদালতে হাজিরা দিতে এসে এমনই মন্তব্য করলেন নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক হিসাবে বলে পরিচিত প্রবীর কয়াল। যদিও তাঁর দাবি, তিনি তাপসের আপ্তসহায়ক নন। তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’। তাঁকে জোর করে বয়ান লেখানো হয় বলেও আদালত চত্বর থেকে দাবি করেছেন প্রবীর।

Advertisement

গত বছর এপ্রিল মাসে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তৃণমূল বিধায়ক তাপসের আপ্তসহায়ক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৬ সাল থেকে বিধায়কের আপ্তসহায়ক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন বছর চল্লিশের প্রবীর। যদিও প্রবীরের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেই দাবি করেছিলেন তেহট্টের বিধায়ক। আদালত চত্বর থেকে একই কথা বললেন প্রবীরও। তাঁর দাবি, তাপসের সঙ্গে সে ভাবে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।

প্রবীর বর্তমানে জামিনে মুক্ত। কিন্তু জামিনের শর্ত হিসাবে তাঁকে মাঝেমধ্যেই আদালতে হাজিরা দিতে আসতে হয়। সেই মতোই মঙ্গলবার সকালে আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন তিনি। সেই আদালত চত্বর থেকেই প্রবীরের দাবি, তিনি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার।

Advertisement

তা হলে কি কাউকে আড়াল করার জন্য তাঁকে চাপ দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে? উত্তরে প্রবীর বলেন, ‘‘আমি নিরীহ ব্যক্তি হয়েও গ্রেফতার হয়েছি। তদন্তকারী আধিকারিকেরা বলতে পারবেন আমাকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আমাকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিক আমাকে বলেছিলেন প্রথম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা আমাদের নেই। এখন যে হেতু ওঁর (তাপসের) নাম আছে, তাই ওঁর নামটাই ভাসছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাকে যে টাকার লেনদেনের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল, তা অন্য এক ব্যবসায়ী বন্ধুর টাকা। এর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ নেই। কেউ দেখাতে পারবে না যে তাপসের সঙ্গে কোনও দিন লেনদেন হয়েছে। ব্যবসায়ীর সঙ্গে লেনদেনের সেই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির টাকা বলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমাকে গ্রেফতারের পর ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে ছিলাম। ৬১ দিন জেল খেটেছি। তার পর আমাকে জামিন দেওয়া হয়।’’

প্রবীর দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপসের সে ভাবে কোনও সম্পর্ক নেই। তা হলে কোন সূত্রে তাঁদের যোগাযোগ? প্রবীরের দাবি, ‘‘আমি কলকাতার হোটেলে কাজ করতাম। উনি সেই হোটেলে মাঝেমধ্যে খেতে আসতেন। সেখান থেকেই সম্পর্ক। মাঝেমধ্যে কলকাতা থেকে বাড়ি গেলে ওঁর বাড়িতে যেতাম। উনি কলকাতা এলে আমাকে পেয়ারা, আপেল এনে দিতে বলতেন। এর থেকে বেশি কিছু না। কোনও ভাবেই আমি নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না। কে জড়িত তা-ও বলতে পারব না।’’

জামিনের শর্ত হিসাবে আদালতে প্রবীর যখন হাজিরা দিতে এসেছেন, তখন সিবিআইয়ের তলবে নিজাম প্যালেসে তৃণমূল বিধায়ক তাপস। এই কথা শুনে তিনি বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের উপর আস্থা আছে। আমার বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। আমার মোবাইল ফোন এবং কাগজও নিয়ে গিয়েছে। আমি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন