Exclusive interview of Kapil Patil

কেন্দ্র নয়, আবাসে যোগ্যদের নাম বাদ দিয়েছে রাজ্যই: আনন্দবাজার অনলাইনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

আবাস নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই তিন দিনের রাজ্য সফরে আসেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। তাঁর সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

প্রণয় ঘোষ

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:২৭
Share:

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। ছবি: সংগৃহীত।

প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে রাজ্য জুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে আবাসের তালিকা থেকে প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম বাদ পড়ার আংশিক দায়ভার কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিলের দাবি, ‘যোগ্য’দের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে রাজ্যই!

Advertisement

আবাস নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই তিন দিনের রাজ্য সফরে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মালদহ ও নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেশ কয়েক জন উপভোক্তার সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার অনলাইন। একান্ত সাক্ষাৎকারে আবাস নিয়ে কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা জানালেন মন্ত্রী। রাজ্যে এখনও যাঁরা গৃহহীন, বার্তা দিলেন তাঁদেরও।

প্রশ্ন: প্রকৃত যোগ্যদের ঘর না-পাওয়া এবং অনুপযুক্তদের ঘর পাওয়া নিয়ে রাজ্য কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?

Advertisement

মন্ত্রী: প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা কিংবা বাদ দেওয়া, কোনওটাই কেন্দ্রের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। সবার আগে আপনাকে আবাস প্লাস যোজনা পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে হবে। প্রথমত, কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বাড়ির অনুমোদন দেয়। কেন্দ্র নাম যোগও করে না, বাদও দেয় না।

প্রশ্ন: তা হলে এই গোটা প্রক্রিয়াটা কী ভাবে চলে?

মন্ত্রী: কেন্দ্রীয় সরকারের অনলাইন পোর্টালে যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা চাওয়া হয়। তালিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় নথি চাওয়া হয়। নথি খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের পর সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়।

প্রশ্ন: তা হলে আপনি বলছেন, রাজ্য সরকার গৃহহীন সব পরিবারের জন্য আবাস প্লাস যোজনায় আবেদন করেনি?

মন্ত্রী: কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে, প্রাথমিক ভাবে ৫৬ লাখ ঘরের জন্য আবেদন জানায় রাজ্য। তার পর নথি পরীক্ষার পর ১৭ লাখ ঘরের অনুমোদন রাজ্যই বাতিল করে। বর্তমানে ৩৯ লক্ষ উপভোক্তার নাম তালিকায় আছে। যার মধ্যে চলতি বছর ১১ লক্ষ বা়ড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ১১ লক্ষ উপভোক্তার নথি পরীক্ষা করে ও সমীক্ষা করে রাজ্য সরকার আরও ১ লক্ষ নাম বাদ দিয়ে ১০ লক্ষ উপভোক্তার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন চেয়ে পাঠিয়েছে। এই ১০ লক্ষ উপভোক্তা এ বার আবাস প্লাসের সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ, বাড়ি পাবেন।

প্রশ্ন: এই ১০ লক্ষ সুবিধা প্রাপকের অ্যাকাউন্টে কবে টাকা আসবে?

মন্ত্রী: সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ হলেই উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা এসে যাবে।

প্রশ্ন: ৬ জানুয়ারি প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও এত দেরি হচ্ছে কেন?

মন্ত্রী: সমস্ত রাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৬ জানুয়ারি দু’দিনের জন্য পোর্টাল খোলা ছিল। ওই সময়ের মধ্যে যাঁরা নথি আপলোড করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টেই টাকা পৌঁছবে। বাকিটা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

প্রশ্ন: কোন জেলা থেকে সব চেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে?

মন্ত্রী: সব থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে মালদহ জেলা থেকে। এই জন্যই ওই জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল গিয়েছিল। তারা তাদের রিপোর্ট শীঘ্রই মন্ত্রকে জমা দেবে।

প্রশ্ন: রাজ্য সফরে এসে কী কী অভিযোগ পেলেন?

মন্ত্রী: মূলত উপযুক্তদের নাম বাদ দেওয়া এবং অনুপযুক্তদের নাম তোলার অভিযোগ পেয়েছি। সরাসরি অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার পরেও সেখান থেকে জোর করে টাকা হাতানোরও অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে।

প্রশ্ন: অভিযোগের সংখ্যা কত? আর অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবছে?

মন্ত্রী: এখনও পর্যন্ত ৮ হাজারের কাছাকাছি অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলি ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের কাছে পাঠিয়েছি। আগামী দিনে বেশ কয়েকটি জেলায় আবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসতে পারে তদন্তের জন্য।

প্রশ্ন: আবাস প্লাস যোজনায় যাঁরা ঘর না পেলেন না, তাঁদের জন্য কিছু বলবেন?

মন্ত্রী: দেশের ১০০ শতাংশ গৃহহীন পরিবারকে পাকা বাড়ি দেওয়াই এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে আমি প্রত্যেক গৃহহীন মানুষকে পাকা বাড়ির পাইয়ে দেওয়ার পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। কোনও রকম দুর্নীতি হলে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশ্ন: অন্য রাজ্যের সঙ্গে এখানকার কিছু পার্থক্য দেখলেন?

মন্ত্রী: প্রচুর ফারাক! আমরা সব লক্ষ করছি। অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন