পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দেশের ২৭টি রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষকেরা কার্যত কেন্দ্রীয় হারে বেতন পান, ব্যতিক্রম কেবল পশ্চিমবঙ্গ। প্রায় দশকব্যাপী বঞ্চনার বিরুদ্ধে এ বার দিল্লিতে সরব হলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। আজ ধর্নায় বসার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। আগামিকাল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের সঙ্গেও দেখা করে নিজেদের বঞ্চনা ও নির্ধারিত হারে বেতন না পাওয়ার বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই শিক্ষকদের সংগঠনটি। তাদের দাবি, শিক্ষাখাতে প্রতিটি রাজ্যকে অর্থ দিয়ে থাকে কেন্দ্র। তাই এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও দায় এড়াতে পারে না। আগামিকাল জাভড়েকরকেও সে কথাই জানাতে চায় তারা।
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকেরা নির্দিষ্ট হারে বেতন পাচ্ছেন না, এই দাবিতে আজ যন্তর-মন্তরে ধর্নায় বসেন উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্তমানে আমরা ২৬০০ গ্রেড পে অনুযায়ী বেতন পাই। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রিভিশন পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স, ২০০৯ (রোপা) অনুযায়ী যাঁরা মাধ্যমিক পাশ করে প্রাথমিকে শিক্ষকতা করছেন একমাত্র তাঁদেরই ওই হারে বেতন পাওয়ার কথা। ২০০৯ সালের পরে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) শিক্ষকদের নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রশ্নে কড়াকড়ি শুরু করে। যে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছিল না তাঁরা তা অর্জনও করেন। কিন্তু সেই যোগ্যতা অনুপাতে বেতন বাড়েনি প্রাথমিক শিক্ষকদের। ফলে প্রতি মাসে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ওই শিক্ষকদের।’’ উদাহরণ দিতে গিয়ে শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার পাশেই ঝাড়খণ্ড। পাশাপাশি দুই এলাকার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের পার্থক্য প্রায় ১০ হাজার টাকা।
সংগঠনের দাবি, বর্তমানে কেন্দ্র তথা অন্য রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের তুলনায় ১০ হাজার টাকা কম পান রাজ্যের শিক্ষকেরা। বহু রাজ্যই কেন্দ্রের ধাঁচে সপ্তম বেতন কমিশনের হারে বেতন দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে। তা হলে ওই রাজ্যগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের ফারাক বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২৭ হাজারে। ওই বৈষম্য দূর করতে এ বার জাভড়েকরের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই শিক্ষক সংগঠনটি।