পরীক্ষকদের জবাব চেয়ে সেই চিঠি
চলতি বছরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখায় গাফিলতি মেনে নিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সেই সূত্রে কয়েক জন পরীক্ষককে শো-কজও করল সংসদ। সূত্রের খবর, পরীক্ষকদের অনেকে ভুল স্বীকার করছেন। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদের ভবিষ্যতে পরীক্ষার প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
এ বছর উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, উত্তরপত্র রিভিউ ও স্ক্রুটিনির জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৪৫ হাজার পড়ুয়া। অনেকেই একাধিক বিষয়ে আবেদন করায় মোট আবেদনের সংখ্যা হয় ১ লক্ষ। প্রায় ছ’হাজার পড়ুয়ার নম্বর বেড়েছে। যার ফলে প্রথম দশে আরও চার জন জায়গা করে নেন। যাঁরা আগেই প্রথম দশে ছিলেন, তাঁদের মধ্যেও পাঁচ জনের নম্বর বেড়ে স্থান বদল হয়। অনেকের ১০ থেকে ১৫ নম্বর বেড়েছিল বলে খবর।
এত সংখ্যক পড়ুয়ার নম্বর বৃদ্ধির ফলে খাতা দেখার প্রক্রিয়াতেই গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষামহলে। সংসদের তরফ থেকে তখনই জানানো হয়েছিল, এমন কেন হল খতিয়ে দেখা হবে। তার পরেই সংসদের সভানেত্রীর তরফ থেকে প্রধান পরীক্ষক, পরীক্ষক এবং স্ক্রুটিনিতে যুক্ত শিক্ষকদের কড়া চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, উত্তরপত্র যাচাই সন্তোষজনক হয়নি। সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদের উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: দাড়িভিটে স্কুল খুলতে উদ্যোগ
প্রসঙ্গত, এ বছরই পরীক্ষা শুরুর আগে সঠিক ভাবে উত্তরপত্র যাচাই নিশ্চিত করতে সমস্ত পরীক্ষক ও স্ক্রুটিনিতে যুক্ত শিক্ষকদের থেকে কার্যত মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছিল সংসদ। তার পরেও এই পরিমাণ ভুল হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। সংসদের এক কর্তা জানান, প্রথমে উত্তরপত্র পৌঁছয় পরীক্ষকের কাছে। তিনি সেটা দেখে পাঠিয়ে দেন প্রধান পরীক্ষকের কাছে। প্রধান পরীক্ষক সেই খাতা স্ক্রুটিনি করতে এক শিক্ষককে দেন। এর পরে খাতা পৌঁছয় প্রধান পরীক্ষকের কাছে। তিনি ফের সমস্ত খতিয়ে দেখে নম্বর পাঠিয়ে দেন। ফলে গাফিলতির দায় সকলেরই।
সূত্রের খবর, কোনও কোনও প্রধান পরীক্ষক বা পরীক্ষক নিজেদের ভুল মেনে নিয়েছেন। অনেকেই বলেছেন যে, আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সংসদ বিষয়টিকে এখানেই ছেড়ে দিতে চায় না বলে সূত্রের খবর। তবে সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসকে বহু বার ফোন করা হলে তিনি ফোন তোলেননি, জবাব দেননি টেক্সট মেসেজেরও। সহ-প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘কলেজিয়াম’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এই পদক্ষেপ স্বাগত। যদিও শো-কজ করার প্রক্রিয়ায় কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। প্রক্রিয়াটি যেন নিরপেক্ষ ভাবে হয়, সংসদের কাছে সেটাই আবেদন।’’