Marriage controversy

‘ভিডিয়োটা আর শেয়ার করবেন না, অসভ্যতাকে প্রশ্রয় দেবেন না’! আবেদন সিঁদুরকাণ্ডের অধ্যাপিকার

একটি ভিডিয়োবার্তায় ওই অধ্যাপিকা বলেন, ‘‘এতে আমার মানহানি গচ্ছে। আমি বিষয়টি সামলে নিলেও পড়ুয়াদের উপর প্রভাব পড়ছে। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২০
Share:

ছবি: ভাইরাল ভিডিয়ো।

ক্লাসরুমে সিঁদুরদান এবং মালাবদলের ভিডিয়োর জন্য তাঁর মানহানি তো হচ্ছেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও মানসিক স্থিতিও নষ্ট হচ্ছে। অন্তত তাঁদের কথা ভেবেই বিতর্কিত ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে আর শেয়ার না করার অনুরোধ করলেন নদিয়ার হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (ম্যাকাউট)-র মনস্তত্ত্ব বিভাগের সেই অধ্যাপিকা।

Advertisement

একটি ভিডিয়োবার্তায় ওই অধ্যাপিকা বলেন, ‘‘এতে আমার মানহানি হচ্ছে। আমি বিষয়টি সামলে নিলেও পড়ুয়াদের উপর প্রভাব পড়ছে। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। ওই ভিডিয়োটা একটা নাটকের অংশ ছিল। আরও অনেকের নাচ-গানের ভিডিয়ো আছে। সেগুলো ভাইরাল হয়নি। কিন্তু একটা মিথ্যা, ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে মাতামাতি করা হচ্ছে। এতে ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যতেও প্রভাব পড়বে। এক বারও ওদের কথা ভাবা হয়েছে? ওদের কী হবে? আপনারা যে আলোচনা করছেন, এতে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না।’’

কলেজ কর্তৃপক্ষের তদন্তের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, ভিডিয়োটি নিয়ে তিনি যা করার করছেন। তিনি বলেন, ‘‘যা জানানোর কর্তৃপক্ষকে জানাব। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি বুঝবে। আমার ভরসা আছে।’’ এর পরেই সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অধ্যাপিকার আবেদন, ‘‘অনেক হয়েছে। আপনাদের হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, অসভ্যতাকে প্রশ্রয় দেবেন না। এ সব বন্ধ করুন। আমার পাশে দাঁড়ান। ভিডিয়োটি আপনারা রিপোর্ট করুন। আর শেয়ার করবেন না। অনুরোধ রইল।’’

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে সমাজমাধ্যমে ওই অধ্যাপিকা এবং এক ছাত্রের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, অধ্যাপিকার পরনে লাল বেনারসি। গলায় গোলাপ এবং রজনীগন্ধার মালা। ভিডিয়োয় তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে দেখা যায় এক কলেজ ছাত্রকে। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, ক্লাসরুমে কী ভাবে ওই আচরণ করলেন অধ্যাপিকা। বিতর্কের আবহে অধ্যাপিকাকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর মেলে, ওই অধ্যাপিকা মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, গোটা বিষয়টি একটি নাটকের অঙ্গ ছিল।

পরে আনন্দবাজার অনলাইনকে ওই অধ্যাপিকা জানান, ‘ফ্রেশার্স’ অনুষ্ঠানের জন্য একটি নাটকের পরিকল্পনা করেছিলেন পড়ুয়ারা। বিয়ের দৃশ্যটি ওই নাটকেরই অংশ। কিন্তু ওই অংশটি ভিডিয়ো করে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে চক্রান্ত রয়েছে বলেই দাবি করেছেন অধ্যাপিকা। তাঁর দাবি, এক অধ্যাপক সহকর্মীই সেই কাজটি করেছেন। অধ্যাপিকার কথায়, ‘‘ভিডিয়ো ছড়ানোর নেপথ্যে এক সহকর্মী অধ্যাপক রয়েছে। উনি অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের প্রধান হতে চাইছেন। তাই সরাতে চাইছেন আমাকে। মানুষ যে কী পর্যায়ে নামতে পারে, তা কল্পনারও বাইরে। বিভাগীয় প্রধান হওয়ার লোভে কেউ এতটা নীচে নামতে পারে, ভাবতে পারছি না।’’

অধ্যাপিকার সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়া প্রথম বর্ষের সেই ছাত্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সুনীর বাইন নামে সেই ছাত্রের বক্তব্য, ‘‘যা বলার ম্যাডামই বলবেন।’’ সুনীর সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে জানিয়েছেন অধ্যাপিকাও। অধ্যাপিকার দাবি, ঘটনার তদন্ত হোক। ওই সময় সেখানে যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement