অচেনা সব্জি চাষে লাভের দিশা

শুধু বাঙালরা নন, আজকাল বাজারে গিয়ে মানকচুর দরাদরি করছেন ঘটিরাও। করবেন না-ই বা কেন, পুষ্টিগুণে মানকচু কম কী সে। গলা চুলকানোর একটা ভয় থাকলেও বেশ কিছু দেশি জাতে এই অপগুণ নেই আর স্বাদে অতুলনীয়। ‘দুধমান’ তেমনই এক জাত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০৪:৩০
Share:

মানকচু

Advertisement

শুধু বাঙালরা নন, আজকাল বাজারে গিয়ে মানকচুর দরাদরি করছেন ঘটিরাও। করবেন না-ই বা কেন, পুষ্টিগুণে মানকচু কম কী সে। গলা চুলকানোর একটা ভয় থাকলেও বেশ কিছু দেশি জাতে এই অপগুণ নেই আর স্বাদে অতুলনীয়। ‘দুধমান’ তেমনই এক জাত। খুবই সহজে চাষযোগ্য এই শর্করা জাতীয় সব্জি জমির আলে পুকুর পাড়ে বা পতিত জমিতে ফলিয়ে বাড়তি রোজগার সহজেই সম্ভব।

Advertisement

ভাল জাতের ৪০০-৫০০ গ্রামের ৮০০টি মুখী বিঘা প্রতি ৩ x ৩ ফুটে হাত খানেকের গর্ত করে আগে রোগনাশকে শোধন করে নিয়ে লাগাতে হবে। আগে থেকে হয়ে থাকা মানের পাশ থেকে বেরনো চারাও নীচের কন্দ-শিকড় সমেত সুন্দর ভাবে ব্যবহার করা চলে। লাগানোর সময় গর্তে কেজি পাঁচেক গোবর সারের সঙ্গে ৫০ গ্রাম হিউমিক ও নিমউর্জা দানা দিয়ে পরবর্তী দুই ও তিন মাসে গাছ পিছু ২০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৩০ গ্রাম ১০:২৬:২৬ সঙ্গে ২৫ গ্রাম হিউমিক দানা মিশিয়ে গোড়ায় মাটি তুলে দিন। বিঘাতে প্রায় ৪০ কুইন্ট্যাল ফলন হবে। ২০-২৫,০০০ টাকা লাভ নিশ্চিত।

লতিকচু

বাজারে হাজারো সব্জির ভিড়ে লতিকচু হল পুষ্টির এক অচেনা নাম। সাধারণত পুকুর ও জলার পাড়ে স্যাঁতসেঁতে জমিতে গজানো আঙুলের মতো রসালো, লম্বা পর্বযুক্ত লতা লতিকচু হিসাবে পূর্ববঙ্গের হেঁশেলে জনপ্রিয়। রক্ত পরিশোধক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত অতি সহজে চাষযোগ্য এই সব্জির চাহিদা এখন ঘটির হেঁশেলেও। অল্প জায়গায় লতিকচুর চাষ করেও তাই লাভ তোলা যায়।

অনেক দিন ধরে চলে আসা দেশি সরু-মোটা শিকড় সমেত লতাই এই রাজ্যে প্রচলিত। এখন উন্নত জাত লতিরাজ, বোম্বাই বা বিসিএসটি ১ ও ৩ ফলন, গুণমান ও চাষে আদর্শ। পুকুর, জলার ধারে জায়গা বার করে নিয়ে চাষ করা যায়, আবার সাধারণ জমিতেও বাণিজ্যিক ভাবে উন্নত জাতের চাষ করতে পারেন। অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্রের মধ্যে লাগানোর সময়। ২x ১.৫ ফুটে শিকড় সমেত লতার চারা বিঘা প্রতি ৪৫০০-৫০০০টা বসানো যাবে। জমিতে আগে পর্যাপ্ত জৈব সারের সঙ্গে পারলে ট্রাইকোডার্মা ১ কেজি ও কিছুটা খোল দিলেই চলবে। চারা ভাল ভাবে লেগে যাওয়ার পর বিঘা প্রতি ১০ কেজি ইউরিয়া ও ১৫ কেজি ১০:২৬:২৬ সার দিয়ে কিছুটা হিউমিক দানার সঙ্গে মাস দেড়েকে মাটি তুলে দিলেই লতির বাড়বৃদ্ধি সচল থাকবে। মোটা পুষ্ট লতি তুলে প্রয়োজন মতো বাজারে বিক্রি করা যাবে।

লেখক: শুভদীপ নাথ।
সহ-উদ্যানপালন অধিকর্তা, মুর্শিদাবাদ। আরও জানতে যোগাযোগ: ৯৪৭৪৫৭৮৬৭১।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement