তিন তালাক প্রথার সমর্থনে কয়েক দিন আগেই কলকাতার রাজপথে সমাবেশ করেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। এ বার কলকাতায় তিন তালাক প্রথার বিরুদ্ধে স্বর শোনা গেল মুসলিম সমাজের ভিতর থেকেই। কলকাতা প্রেস ক্লাবে শনিবার ‘প্রগতিশীল মুসলিম সমাজ’-এর পক্ষ থেকে প্রাক্তন আইপিএস নজরুল ইসলাম, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবীবিদ্যা বিভাগের প্রধান তনভির নাসরিন, ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালের সুপার আনোয়ার হোসেন, প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার এবং ওসমান মল্লিক-সহ মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট জনেরা আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ও নারীর সমানাধিকারের দাবি তোলেন। পাশাপাশিই, মুসলিম পুরুষের বহু বিবাহের অধিকার বাতিল করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা।
ওই মুসলিম বিশিষ্ট জনদের বক্তব্য, যাঁরা তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথার পক্ষে, তাঁরা ধর্ম মানছেন না। কারণ, কোরানে তাৎক্ষণিক তিন তালাকের সংস্থান নেই। আসলে অধিকাংশ মৌলবি ও রাজনৈতিক নেতারা ধর্মগ্রন্থ পড়েননি। নজরুল বলেন, ‘‘মুসলিমরা কর ব্যবস্থা, সম্পত্তি কেনা-বেচার মতো দেওয়ানি বিষয়ে দেশের সাধারণ আইন মেনে নেন। তা হলে বিয়ে, সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রভৃতি নারীর সমান অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নে তাঁরা সেটা কেন মানবেন না?’’ তনভির বলেন, ‘‘আমি তালাকের বিরোধিতা করছি বলে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন— আমি কতখানি মুসলমান, আমি তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন করতে চাই, তাঁরা কতখানি ভারতীয়? তাঁদের পাসপোর্ট সৌদি আরবের নয় তো?’’
তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি অবশ্য ওই বিশিষ্ট জনেদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বিজেপি পয়সা দিয়ে কিছু লোক ঠিক করেছে, যারা এ সব বলছে। এরা কেউ ইমানদার মুসলিম নয়। প্রকৃত মুসলিমরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সমর্থন করেন না।’’