Sukanta Majumdar

ডায়মন্ড হারবারে আহত বিজেপি কর্মীদের দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে সুকান্ত! উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান

তৃণমূলের দাবি, এতে দলের কেউ জড়িত নন। যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা বিজেপিরই নিচুতলার কর্মী। সবটাই বিজেপির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৫
Share:

কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।

ডায়মন্ড হারবারে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার! দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিজেই তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি। উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান।

Advertisement

বিহার নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর বিজয়মিছিল করতে গিয়ে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হন একদল বিজেপি কর্মী। সেই হামলায় আহতদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় গিয়েছিলেন সুকান্ত। বিজেপির মণ্ডল সভাপতির সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। হঠাৎই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল যুবক। নিজেদের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের অনুগামী বলে দাবি করে তাঁরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। সুকান্তকে নিরাপদে এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সুকান্ত বলেন, ‘‘বিহার ভোটের ফলপ্রকাশের দিনে ডায়মন্ড হারবারে যে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা হয়েছিল, আমি যাতে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে না পারি, সে জন্য তৃণমূল সব রকম চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু আমাদের আটকাতে পারেনি।’’

Advertisement

সুকান্তের দাবি, বিক্ষোভকারীরা সকলেই গলায় গেরুয়া উত্তরীয় জড়িয়ে এসেছিলেন, যাতে তাঁদের তৃণমূল হিসাবে চিহ্নিত করা না যায়। সুকান্তের আরও দাবি, নিজেদের আসল পরিচয় গোপন করতেই নিজেদের দিলীপের অনুগামী বলে পরিচয় দেন বিক্ষোভকারীরা। সুকান্তের কথায়, ‘‘বজবজে যখন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর বাড়ি যাচ্ছিলাম, তখনও একই কৌশল নিয়েছিল। কপালে গেরুয়া টিপ, গলায় গেরুয়া উত্তরীয় নিয়ে হামলা করতে এসেছিল। তখন ওইটুকুই করেছিল, নিজেদেরকে বিজেপি বলে দাবি করেনি। এ বার সেই দাবিও করছে। ধাপে ধাপে এগোচ্ছে।’’ সুকান্তের প্রশ্ন, ‘‘ওরা যদি সত্যিই বিজেপি হয়, তা হলে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করল না কেন?’’

সুকান্তের আরও দাবি, বৃহস্পতিবার যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন রাজু দাস। বিজেপির যুব মোর্চার প্রাক্তন সহ-সভাপতি রাজু ২০২১ সালে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও রাজু-সহ তৃণমূলের দাবি, এতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নন। যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা বিজেপিরই নিচুতলার কর্মী। সবটাই বিজেপির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। সমাজমাধ্যমে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘অশিক্ষিত বর্বর তৃণমূলের নতুন পন্থা দেখুন! গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরে আর কপালে তিলক এঁকে কারসাজি করে বিজেপি কর্মী সেজে এরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে! এই অতি সস্তা এবং জঘন্য স্ক্রিপ্ট যারা তৃণমূলকে পৌঁছে দিচ্ছে, তাদের এক পয়সারও মূল্য নাই।’’

তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এটা বিজেপির অন্দরে কোন্দলের ফল। দিলীপের অনুগামীরাই সুকান্তকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তৃণমূল সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘‘দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের বিক্ষোভের মুখে সুকান্ত মজুমদার। ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে। সুকান্তের কনভয় ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের। দিলীপ ঘোষের নামে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের মুণ্ডুপাত করেন ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি কর্মীরা।’’ পাল্টা তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘‘যারা নিজের ঘর সামলাতে পারে না তারা বাংলা দখল করবে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement