তখন শরীরে নানান বদল আসে। পরিবর্তন আসতে থাকে মনেও। শরীর আর মনে হানা দেয় বিচিত্র সব সমস্যাও। বয়ঃসন্ধিকালের সেই সব সমস্যা আর তার সুরাহা সম্পর্কে এ বার জীববিজ্ঞানের বইয়ে আরও বেশি করে আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছে এসসিইআরটি বা স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং।
এসসিইআরটি-র বিশ্বাস, স্কুলের বইয়ে শরীর-মনের সমস্যার খুঁটিনাটি আলোচনা থাকলে কিশোর-কিশোরীরা তার স্বাভাবিকতা সম্পর্কে আশ্বস্ত হতে পারবে। বয়ঃসন্ধিকালে মন ও শরীরের পরিবর্তন নিয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে যে-সব প্রশ্ন জাগে, অনেক সময়েই তারা মা-বাবা বা অন্য অভিভাবকদের সেগুলো জানাতে পারে না। ফলে উত্তর অজানা থেকে যায়। শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, পাঠ্যপুস্তকের অন্তরঙ্গ সান্নিধ্য সেই সব প্রশ্নের অস্বস্তি কাটিয়ে ছেলেমেয়েদের আশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ করে তোলার সহায়ক হবে। ন্যাশনাল পপুলেশন এডুকেশন প্রজেক্টের অধীনে এসসিইআরটি পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি ও নদিয়ার কয়েকটি স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে সমীক্ষা চালায়। তার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বয়ঃসন্ধির নানা শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে অনেক পড়ুয়ার মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা আছে। সেই সব ভ্রান্ত ধারণা থেকে কুসংস্কারেরও শিকার হচ্ছে তারা। কিছু কিছু যৌন রোগ সম্পর্কেও নানা ভুল ধারণা রয়েছে তাদের।
সমীক্ষকদের তরফে সুব্রত বিশ্বাস জানান, আগে লোকশিক্ষার মাধ্যমে বয়ঃসন্ধির সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। এড্সের মতো যৌন রোগ কী ভাবে ছড়ায়, তা বোঝানো হয়েছে গান ও পথনাটিকার মাধ্যমে। ‘‘কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেটা যথেষ্ট নয়। তাতে বেশির ভাগ পড়ুয়াই সচেতন হচ্ছে না। তাই পাঠ্যপুস্তকে আরও বেশি আলোচনা দরকার,’’ বলেন সুব্রতবাবু।
পাঠ্যপুস্তকে বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ‘‘বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনজনিত সমস্যায় পড়লে অনভিজ্ঞ বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে। পাঠ্যপুস্তকে এই নিয়ে আলোচনা থাকলে ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে,’’ বলছেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য।।