রাজ্যের কাছে জমি চেয়ে পথে শ্রমজীবী

বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের সম্প্রসারণের জন্য ১৪ বিঘা জমি পেতে রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হল নাগরিক আবেদন। কেন ওই হাসপাতালটিকে আড়ে-বহরে বাড়িয়ে তোলা জরুরি, এলাকাবাসীর বক্তব্যে বড় হয়ে উঠল সেই কথাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের সম্প্রসারণের জন্য ১৪ বিঘা জমি পেতে রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হল নাগরিক আবেদন। কেন ওই হাসপাতালটিকে আড়ে-বহরে বাড়িয়ে তোলা জরুরি, এলাকাবাসীর বক্তব্যে বড় হয়ে উঠল সেই কথাই।

Advertisement

রবিবার বিকেলে বেলুড় লালবাবা কলেজ প্রাঙ্গণে নাগরিক কনভেনশনে শুধু ওই হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত কর্মীরাই নন, উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি, ডাক্তার, লেখক, শিক্ষক থেকে শুরু করে হাওড়া পুরসভার স্থানীয় কমিশনারেরাও। ছিলেন বহু সাধারণ মানুষ, যাঁরা চিকিৎসার জন্য শ্রমজীবী হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। মূল বক্তব্য সকলের এক: কোনও ভাবেই জমিটি প্রোমোটারের গ্রাসে যেতে দেওয়া চলবে না।

১৯৯৫ সালে বন্ধ হওয়া ইন্দো-জাপান স্টিলস লিমিটেডের জমিতে ওই কারখানারই শ্রমিকদের চেষ্টায় মাথা তুলেছে হাসপাতালটি। মূলত সাধারণ মানুষের চাঁদায় একটু-একটু করে বেড়ে এখন পাঁচ শয্যা থেকে পঞ্চাশ শয্যা হয়েছে। বাধা, হুমকি কম আসেনি। মামলাও হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে কাজ আটকানো যায়নি, তার প্রধান কারণ এমন একটি হাসপাতাল গড়ার প্রয়োজনীয়তা।

Advertisement

বস্তুত, লিলুয়ার একাংশ থেকে শুরু করে বালি-বেলুড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নির্ভরযোগ্য হাসপাতাল নেই বললেই চলে। কয়েকটি নার্সিংহোম যা আছে তা হয় নিতান্তই নিরেশ, অথবা খরচ সাধারণের আয়ত্তের বাইরে। যে কারণে স্থানীয় কমিশনার প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার বলেন, ‘‘এই হাসপাতালটি বড় করে তোলা ভীষণ জরুরি।’’ এখন দূর-দূরান্ত থেকেও রোগীরা আসছেন। ভিড়ের ঠেলায় হুগলির শ্রীরামপুরে বড় বেলুমিল্কি গ্রামে জমি কিনে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে ‘কার্ডিয়াক ইউনিট’। তার পরেও রোজ উপচে পড়া ভিড়ে নাভিশ্বাস উঠছে সকলের।

বহু দড়ি টানাটানির পরে, ২০১৫ সালে বন্ধ কারখানার জমিটি আইন মোতাবেক ‘খাস’ করে রাজ্য সরকার। তখনই বলা হয়েছিল, কারখানা করার জন্য দেওয়া জমিটি যেহেতু আর সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না, অতএব ওয়েস্ট বেঙ্গল এস্টেটস অ্যাকুইজিশন আইনের ৬(৩) ধারা মোতাবেক সেটি ফিরিয়ে নেওয়া হল। কিন্তু তার পরেও কার্যত অস্তিত্বহীন সেই সংস্থার হয়ে ল্যান্ড ট্রাইব্যুনালে গিয়েছেন এক প্রোমোটার। শুনানি চলছে। তাতে যদি রাজ্য জেতে, তবে হাসপাতালের জন্য জমি দিতে অসুবিধে থাকার কথা নয়। অন্যথায় লড়াই দীর্ঘায়িত হবে।

ইন্দো-জাপান স্টিলস লিমিটেড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক ফণিগোপাল ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘আড়িয়াদহের বেণী ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ বহু বন্ধ কারখানার জমি বেআইনি ভাবে আত্মসাৎ করেছে প্রোমোটার। আমরা তা হতে দেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন