দুই পরিবারের সংঘর্ষে আহত মহিলা-সহ ৯

জমি নিয়ে গোলমালে মারপিটে জড়াল দুই জেঠতুতো-খুড়তুতো ভাইয়ের পরিবার। দুই পরিবারের চার মহিলা-সহ ন’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০৫
Share:

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে শনিবার শুভ্র মিত্রের তোলা ছবি।

জমি নিয়ে গোলমালে মারপিটে জড়াল দুই জেঠতুতো-খুড়তুতো ভাইয়ের পরিবার। দুই পরিবারের চার মহিলা-সহ ন’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুরের ভড়া সংলগ্ন ধরমপুর গ্রামে। জখমদের মধ্যে আটজনকে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাপি নায়ক নামে একজনের চোট গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কর্মী। তবে এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য এ দিন বিকেল পর্যন্ত বিষ্ণুপুর থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি দু’টি পরিবারের কোনও পক্ষই। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঘটনাটি নিয়মমাফিক পুলিশকে জানানো হচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দা অজিত নায়কের সঙ্গে তাঁর খুড়তুতো ভাই প্রীতম নায়কের বিবাদ দীর্ঘদিনের। পারিবারিক একটি জমির দখল নিয়েই মূল অশান্তি দুই ভাইয়ের মধ্যে। অজিতবাবুর স্ত্রী গয়েশ্বরী নায়ক জানান, যে বাস্তু জমিটি ঘিরে টানাপড়েন চলছে, সেখানেই তাঁদের একটি মাটির রান্নাঘর রয়েছে। সম্প্রতি সেই মাটির রান্নাঘর ভেঙে পাকা বাড়ি তৈরি করা হবে বলে তাঁরা ঠিক করেছিলেন। ইমারতি দ্রব্যও কিনে আনা হয়।

এ দিন থেকে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। এ দিকে শ্রমিকদের কাজে লাগতে দেখেই প্রীতমবাবু আপত্তি তোলেন। দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা শুরু হয়। বাধে সংঘর্ষ। এ দিনই ডিউটি থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন অজিতবাবুর ছেলে বাপি। মারপিটের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন তিনিও। বাপির মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। গয়েশ্বরীদেবীর বক্তব্য, “ওরা ইচ্ছে করে ঝগড়া বাধিয়ে মারধর করল। আমার ছেলেকে খুন করার জন্যই ওর মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করছে।’’

Advertisement

প্রীতমবাবুর অবশ্য দাবি, ওই বাস্তু ভিটেতে কার অধিকার রয়েছে, তা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগে সেখানে পাকা বাড়ি তৈরি করা যাবে না, এ কথাই তিনি বলতে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি বাড়ি তৈরি করতে বারণ করতে গেলে প্রথমে ওরাই আমার মাথায় লাঠির ঘা মারে। আমার মাথা ফেটে গিয়ে রক্ত ঝরতেই বাড়ির সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়লে সংঘর্ষ হয়।” তাঁর অভিযোগ, “ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে গিয়েছিলাম। ওরা যদি আমার উপর ওই ভাবে চড়াও না হতো, তা হলে এই ঘটনা ঘটত না।”

গোটা ঘটনায় অজিতবাবু, তাঁর স্ত্রী গয়েশ্বরীদেবী, তাঁদের ছেলে বাপি ছাড়াও অজিতবাবুর ভাতৃবধূ চায়নাদেবী ও ভাইপো রাখহরি জখম হয়েছেন। অন্যদিকে প্রীতমবাবু-সহ তাঁর স্ত্রী রেবাদেবী, প্রীতমবাবুর ভাইয়ের স্ত্রী মুক্তাদেবী ও ভাইপো ভোম্বল জখম হয়েছেন। ঘটনার পরেই পড়শিরাই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন