হাতে ব্ল্যাক কার্প। —নিজস্ব চিত্র।
মাছচাষের পুকুরে গেঁড়ি-গুগলি বেড়ে গিয়েছিল অনেকটা। মাছের সব খাবার খেয়ে নিচ্ছিল সেগুলি। চিন্তায় পড়েন মৎস্যচাষি ভক্তদাস দে। সুরাহার খোঁজে যান মৎস্য দফতরে। আধিকারিকরা তাঁকে পুকুরে বিশেষ এক প্রজাতির দু’টি মাছ ছাড়তে বলেন।
তাতেই মুশকিল আসান।
ভক্তদাসবাবু জানান, সেই দু’টি মাছ খেয়ে ফেলেছে পুকুরের বেশিরভাগ গেঁড়ি-গুগলি। আড়াই বছরে ওজনেও বেড়েছে অনেকটা। তা কেমন, তা দেখতে শুক্রবার সকালে ভক্তদাসবাবুর পুকুরে যান সিউড়ি ১ ব্লকের মৎস্য অধিকর্তা (সমবায়) রণজিৎ মণ্ডল, সিউড়ি ১ ব্লকের বিডিও শিবনাথ সরকার, ব্লক সহ-মৎস্য অধিকর্তা মৃণাল গঙ্গোপাধ্যায়। জাল টেনে পুকুর থেকে মাছ দু’’টি তুলতেই অবাক সবাই। আড়াই বছরেই মাছ দু’টির ওজন ছুঁয়েছে ১৩-১৪ কিলোগ্রাম।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, যে মাছের প্রজাতি পুকুরে ছেড়েছিলেন ভক্তদাসবাবু, তার নাম ব্ল্যাক কার্প। রণজিৎবাবুর কথায়, ‘‘এই মাছ পুকুরে থাকলে গেঁড়ি-গুগুলির সমস্যাই শুধু নয়, মাছগুলি পুকুরের পাঁক এমন ভাবে ঘেঁটে দেয় যাতে বিষাক্ত কোনও গ্যাস সেখানে জমতে পারে না।’’ তিনি আরও জানান, মাছটি আদতে ভারতীয় নয়, এটি ভিয়েতনাম থেকে নিয়ে আসা। তবে কয়েক বছর ধরে এ দেশে চাষ হওয়ার ফলে সেটি ‘ভারতীয়’ হয়ে গিয়েছে। মাছটি অনেকটা কালবোসের মতো। তবে বড় আকারের এবং অত্যন্ত দ্রুত বাড়ে। বছরের বৃদ্ধির পরিমাণ আড়াই থেকে পাঁচ কিলোগ্রাম। মৎস্য আধিকারিকেরা জানান, একটি পুকুরে শুধু ওই মাছই নয়, একাধিক প্রজাতির মাছ একসঙ্গে চাষ করা যায়।
ভক্তদাসবাবু অবশ্য শুধু মাছচাষি নন। জেলার অন্যতম নামী চাষিও। গত বছর ২৭ রকম প্রজাতির ধান চাষ করেছিলেন। এ বার করেছে্ন ৩২ প্রজাতির দেশজ ধান। সেগুলি জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। ভক্তদাসবাবুর কথায়, ‘‘আমার বাবা নামী চাষি ছিলেন। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছেন। আমি সেই ধারা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’’