টিএমসিপি নেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ

ইস্তফা দিতে চাই, চিঠি ২০ জনের

নেত্রী তাঁদের কাউকে খবর না দিয়ে জেলা নেতৃত্বের হাতে গোনা দু’-একজনকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে আসায় তাঁরা অপমানিত হয়েছেন বলে ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব অভিযোগ তুলেছেন। শনিবার শান্তিরামবাবুকে চিঠি দিয়ে সংগঠন থেকে বিরত থাকার কথা ২০ জন সদস্য জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০১:১০
Share:

বিক্ষোভ: পুরুলিয়া জে কে কলেজের ছাত্র সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের চিঠি পাঠানোর পরে শনিবার বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

গোষ্ঠী রাজনীতি চলবে না বলে নেতা-কর্মীদের যখন তিনি সতর্ক করছেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধেই এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুললেন সংগঠনেরই কিছু সদস্য। জেলায় আসা টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে শনিবার পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজের ছাত্র সংসদের ২০ জন সদস্য একযোগে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করলেন। এতে অস্বস্তিতে দলীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

শুক্রবার জয়া, সহ-সভাপতি রেজাউল মোল্লা পুরুলিয়ায় এসে কয়েকটি কলেজের সঙ্গে জে কে কলেজেও ভর্তি প্রক্রিয়া কেমন চলছে তা দেখতে যান। জয়া জানিয়েছিলেন, সংগঠনকে ব্যবহার করে ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও অনৈতিক কাজ হচ্ছে কি না, সংগঠনের কর্মীদের কী ভূমিকা— তা দেখতে গিয়েছিলেন।

কিন্তু নেত্রী কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই জলঘোলা শুরু হয় কলেজের ছাত্র-নেতাদের মধ্যে। নেত্রী তাঁদের কাউকে খবর না দিয়ে জেলা নেতৃত্বের হাতে গোনা দু’-একজনকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে আসায় তাঁরা অপমানিত হয়েছেন বলে ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব অভিযোগ তুলেছেন। শুক্রবার রাতে তাঁদের বেশ কয়েকজন জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে দেখা করে অসন্তোষের কথাও জানান।

Advertisement

শনিবার শান্তিরামবাবুকে চিঠি দিয়ে সংগঠন থেকে বিরত থাকার কথা ২০ জন সদস্য জানিয়ে দিয়েছেন। চিঠিতে পদত্যাগের কারণ উল্লেখ না করলেও ওই কলেজের টিএমসিপি-র ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আনিস রাজা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা এই কলেজে সাংগঠনিক ভাবে দায়িত্বে রয়েছি। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে মাত্র দু’-একজন নেতাকে নিয়ে রাজ্য নেত্রী কলেজ পরিদর্শন করে গেলেন! কেন আমাদের উপেক্ষা করা হল, জানতে চেয়েও সদুত্তর পাইনি। তাই আর আমাদের সংগঠনে থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছি না। একযোগে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করলাম।’’

ছাত্র সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক সুমনকুমার দে বলেন, ‘‘টিএমসিপি এই কলেজের ৩৮টি আসনের সবগুলিই জয়ী হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে ২০ জন সরে দাঁড়ানোয় স্বভাবতই টিএমসিপি এই কলেজে ক্ষমতা হারাল।’’ যদিও তাঁরা কলেজের সংসদ থেকে এ দিন ইস্তফা দেননি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ শান্তনু চট্টোপাধ্যায়।

এ দিন হুড়ার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজে জেলার সমস্ত কলেজ ইউনিটগুলিকে নিয়ে সাংগঠনিক সভা ডেকেছিল টিএমসিপি। কিন্তু ওই সভা বয়কট করেন জগন্নাথ কিশোর কলেজের ওই বিক্ষুব্ধ সদস্যেরা। সংগঠনের পুরুলিয়া শহর কমিটির সভাপতি সব্যসাচী পাঠক বলেন, ‘‘আমাদের উপেক্ষা করার প্রতিবাদে এ দিনের সভা বয়কট করেছি।’’

টিএমসিপির রাজ্য সভানেত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘শুক্রবার আচমকা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তবুও এই কলেজের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের খবর পাঠানো হয়েছিল। একবার ওঁরা ফোন করেছিল, ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে পারনি। কিন্তু পরে ডেকেছিলাম। তবে কেউ পদত্যাগ করেছেন বলে শুনিনি।

শান্তিরামবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে ওঁরা আমাকে অভিমানের কথা জানিয়েছে। ওঁরা তো ঘরের ছেলে। সব মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন