‘কন্যাশ্রী’তে কবিতা লিখে সংবর্ধিত

চার লাইনের কবিতাতেই যেন চার হাজার ওয়াটের বাতির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে প্রচারের আড়ালে থাকা প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের মুখ। তাই সোমবার সেই কবিকেই সংবর্ধনা জানাল স্কুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৩
Share:

চার লাইনের কবিতাতেই যেন চার হাজার ওয়াটের বাতির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে প্রচারের আড়ালে থাকা প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের মুখ। তাই সোমবার সেই কবিকেই সংবর্ধনা জানাল স্কুল। কবি আর কেউ নয়, ময়ূরেশ্বরের ওই বাজিতপুর হাইস্কুলেরই একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্বেতা সরকার। এ বার কন্যাশ্রী প্রকল্পে ইংরেজিতে কবিতা লিখে জেলায় প্রথম স্থান দখল করেছে সে। রবিবার সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তার হাতে শংসাপত্র-সহ ৫০০০ টাকা পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।

Advertisement

সংলগ্ন সাঁইথিয়া থানার হরিসড়া গ্রামে বাড়ি শ্বেতার। বাবা সত্যেশবাবুর প্রাইভেট টিউশনের উপর নির্ভর করেই কোনও রকমে চলে তাদের পাঁচ সদস্যের সংসার। তারই মধ্যে গত বছর ইংরেজিতে ৬৯ নম্বর-সহ মোট ৪৯০ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছে সে। কন্যাশ্রী প্রকল্পে কবিতা প্রতিযোগিতার খবর পেয়ে ইংরেজিতে চার লাইনের কবিতা লিখে স্কুলে জমা দেয়। ব্লক স্তর পেরিয়ে জেলায় প্রথম স্থান দখল করে তার লেখা সেই কবিতা। মেয়ের এমন কৃতিত্বে অভিভূত সত্যেশবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি, ওর লেখা কবিতা জেলায় প্রথম স্থান পাবে। আমি তো ওকে তেমন সময় দিতে পারি না। ওর স্কুলের শিক্ষকেরাই এই কৃতিত্বের দাবিদার।’’

স্কুলের ইংরাজি শিক্ষক শঙ্কর বাগচী জানান, স্কুলের আরও কয়েক জন ছাত্রী কবিতা জমা দিয়েছিল। তার মধ্যে শ্বেতারটাই ছিল সেরা। তাই তার কবিতাটাই প্রতিযোগিতায় পাঠানো হয়েছিল। ‘‘তখনও ভাবিনি সেটাই জেলায় প্রথম স্থান পাবে,’’—বলছেন তিনি।

Advertisement

তবে শুধু শ্বেতাই নয়, কন্যাশ্রী প্রকল্পে ব্লক স্তরে স্লোগান লিখে নবম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা সাহা প্রথম এবং প্রবন্ধ প্রতিযগিতায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মণীষা সাহা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। সোমবার ওই তিন কন্যাকেই সংবর্ধিত করেছে স্কুল। সংবর্ধনা পেয়ে তিন জনই রীতিমতো আপ্লুত। তারা বলছে, ‘‘শুধু লেখাতেই নয়, বাল্যবিবাহ রোধে আমরা এলাকায় জনমত গড়তে চেষ্টা করব।’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্তকুমার দাস জানান, ওই তিন ছাত্রীর সাফল্য শুধু স্কুলের মুখই উজ্বলই করেনি, অন্য পড়ুদেরও অনুপ্রাণিত করেছে। তাই ওদের সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। তিন জনকে ‘রোল মডেল’ করে এলাকায় কন্যাশ্রী ক্লাব গড়ারও চিন্তা ভাবনা করছেন প্রশান্তবাবুরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন